২১ এপ্রিল, ২০১৮ ২২:১৯

সাপুড়ের সাথে নাচে সাপ!

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া:

সাপুড়ের সাথে নাচে সাপ!

বগুড়ায় বৈশাখী মেলায় মোরগ লড়াই, সাপ খেলা, লাঠি খেলা, বউঁচি খেলাসহ গ্রামীণ খেলা নিয়ে মেতে ছিল শিক্ষার্থীরা। বগুড়া শহরের আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে ৮দিনের বৈশাখী মেলার শেষ দিন শনিবারও দেখানো হয় সাপ খেলা। সাপ খেলার পাশাপাশি শুক্রবার দেখানো হয় লাঠি খেলা। আর মোরগ লড়াই। গ্রামীণ এই খেলা দেখতে শহুরে মানুষ ভিড় জমায়। হাজার হাজার মানুষ এই খেলা দেখে মুগ্ধ হন। খেলা দেখার তালিকায় কিশোর ও তরুণদের পাশাপাশি বয়স্কদেরও ভিড় করতে দেখা হয়।

শক্ত ঠোঁট ও নখের সাহায্যে চলে মোরগ লড়াই। আর এই লড়াইয়ে অংশ নেয় ৬টি শক্তিশালী মোরগ। চারপাশে হাজারো দর্শকের করতালির মধ্য দিয়ে এ খেলা চলে। এক অন্যরকম দৃশ্য। শহুরে জীবনে গ্রামীণ ছোঁয়া। কিছু সময়ের জন্য হলেও সকলেই ফিরে গিয়েছিল সেই ধুলোমাখা পথের প্রিয় গ্রামে। মোরগের লড়াইয়ে অংশ নিয়েছে ৬টি মোরগ। বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলার নাফিউল আমিন নিশাত, সাবগ্রামের পারভেজ আলম, শেরপুরের রাহাত শাহরিয়ার, শহরের সুত্রাপুর তামিম পাপ্পু, চকসুত্রাপুরের সুমন ও ঢাকার বাসিন্দা আলাউদ্দিন আলী মেলায় এসেছিলেন তাদের মোরগ নিয়ে। পৃথকভাবে ২টি করে মোরগ নিয়ে খেলা অনুষ্ঠিত হয়।

মোরগের লড়াইয়ে প্রথম পুরস্কার হিসেবে একটি এলইডি টিভি, ২য় পুরস্কার টেবিল ফ্যান দেয়া হয়েছে। এতে বিচারক ছিলে এড. সুজাউদ্দৌলা, ইসকেন্দার আলী। এছাড়া গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি ও বউচিঁ খেলার আয়োজন করা হয়। এসব খেলা দেখতে নারী পুরুষ ভিড় করে মেলা প্রাঙ্গনে। মেলায় মাটির তৈজসপত্রের ছিল সমাহার।

গ্রাম বাংলার আরো একটি ঐতিহ্যবাহী সাপের খেলা। সাপুড়ে নাচছেন সঙ্গে সাপও দেখাচ্ছে নানান অঙ্গভঙ্গি। গলায় সাপ জড়িয়ে দেখাচ্ছে নানা শারীরিক কসরত। উপস্থিত নারী-পুরুষ, শিশুসহ বিপুল সংখ্যক মানুষ উপভোগ করেন এ খেলা।

বগুড়ার শেরপুরের গাড়িদহ এলাকার আলাল শেখ এর সাপের খেলায় মুগ্ধ দর্শকরা। তাকে সহযোগিতা করেছে তার দুই ছেলে ৭ বছর বয়সী আনোয়ার ও ৫ বছর বয়সী হযরত। এই খেলা গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী একটি খেলা। সাপ ভয়ংকর একটি প্রাণী। সেই সাপ সাপুড়ের কথায় হেলছে-দুলছে, ঘাড়ের উপর নাচছে, গলায় পেচিয়ে ধরে আছে, হাতে ছোবল দেয়ার ভঙ্গি কত কি দেখাচ্ছেন সাপ আর সাপুড়ে।

বগুড়া শহরের আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে বাংলামুখ বগুড়া জেলা শাখা আয়োজিত ৮ দিনব্যাপি বৈশাখী মেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মেলায় গ্রামীণ ঐতিহ্য তুলে ধরতে গ্রামীণ ঐতিহ্যের সংগ্রহশালায় অর্ধশতাধিক বিভিন্ন জিনিসপত্রের প্রদর্শনীও করা হয়। শনিবার মেলার শেষ দিনেও বিভিন্ন গ্রামীণ খেলা তুলে ধরা হয়।

গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যকে বর্তমান প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে এই খেলার আয়োজন বলে জানান, বৈশাখী মেলা উদযাপন কমিটির আহবায়ক ও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ খান রনি। 

সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্তিত ছিলেন বৈশাখী মেলা উদযাপন কমিটির আহবায়ক ও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ খান রনি, উপদেষ্টা আব্দুস সালাম বাবু, মেলা কমিটির হাসিবুল ইসলাম মুন, আব্দুল আউয়াল, আতাউর রহমান আসলাম, মিজানুর রহমান মিন্টু, জহুরুল ইসলাম, মাহমুদুল হাসান রকি, ফরিদুল ইসলাম মুক্তা, মিম পোদ্দার, নাইম ফেরদৌস, সজল প্রমুখ। 

বিডিপ্রতিদিন/ ই-জাহান

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর