২৩ এপ্রিল, ২০১৮ ১৬:০৯

রায়পুরে চিকিৎসক সংকটে স্বাস্থ্যসেবার বেহাল দশা

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি:

রায়পুরে চিকিৎসক সংকটে স্বাস্থ্যসেবার বেহাল দশা
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় চিকিৎসক সংকটের কারণে স্বাস্থ্যসেবার অবস্থা নাজুক। প্রায় সাড়ে ৬ লাখ জনগণের চিৎকিসাসেবা দেওয়ার জন্য ডাক্তার রয়েছেন ৬ জন। উপজেলার ৫০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ ১০টি ইউনিয়নের ৩৪টি কমিউনিটি ক্লিনিকে গত দেড় বছর ধরে চিকিৎসক সংকট ও নানাবিধ কারণে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম ভেঙে পড়েছে। চিকিৎসাসেবা না পেয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ জনগণ।
 
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ২৫০-৩৫০ জন রোগী সেবা নিতে আসেন। কিন্তু ওয়ার্ড কেবিনে ভর্তিরত রোগী এবং জরুরি বিভাগে কোন ডাক্তর না থাকায় উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা অসহায় রোগীরা চিকিৎসা সেবা নিতে না পেরে বাধ্য হয়ে শহরের ১৪টি প্রাইভেট হাসপাতালে গিয়ে ভুয়া ডাক্তারদের কাছে গিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। 
 
অন্যদিকে, সরকারি হাসপাতালের এক্সরে মেশিনটি এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে। এছাড়া আল্ট্রাসনোগ্রাফি ও ইসিজি মেশিনও দেড় বছর ধরে পড়ে থাকলেও মেরামতের নেই কোন উদ্যোগ। চলতি মাসে দুইজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বদলি ও ডাক্তার সংকটের কারণে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। এদিকে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ৩৪টি কমিউনিটি ক্লিনিকেও মিলছেনা কাঙ্খিত স্বাস্থ্যসেবা। এছাড়া দুইটি স্বাস্থ্য উপ-কেন্দ্রে চিকিৎসক না থাকায় সেবা না পেয়ে ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছেন ঐ এলাকার সাধারণ জনগণ। 
 
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ৫০ জনের শিশু-নারী ও পুরুষের আসন সংখ্যা রয়েছে। ১৩ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও আছেন মাত্র ৬ জন। ৬ জন ডাক্তারের মধ্যে ৪ জনই আবাসিক মেডিকেল অফিসার। ডাক্তার সংকটের মাঝেও এ মাসে ২জন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বদলী হয়েছেন। একজন যোগদান করলেও ৪দিন ধরে ছুটিতে রয়েছেন। সাধারণ পরীক্ষার জন্য টেকনোলজিষ্ট ও রেডিওলজিষ্ট না থাকায় এক্স-রে কক্ষটি তালাবদ্ধ রয়েছে গত এক যুগ ধরে। কোন চিকিৎসক এ হাসপাতালে আসলেও নানা অযুহাতে অন্যত্র বদলী হয়ে চলে যান। গত দেড় বছর ধরে এভাবেই খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে হাসপাতালটির সেবা কার্যক্রম। 
এদিকে সঠিক তদারকির অভাবে প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে চলছে অপচিকিৎসা। সম্প্রতি একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসার কারণে একজন প্রসূতি মারা যান। অভিযোগ উঠেছে অদক্ষ টেকনিশিয়ান এবং অকেজো যন্ত্রপাতি দিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে চলছে পরীক্ষা নিরীক্ষার কাজ। প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোর অপচিকিৎসার বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণ ইতিমধ্যে মানববন্ধনও করেছে।
 
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোস্তফা খালেদ আহম্মদ বলেন, ‘রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নানাবিধ সমস্যা পাশাপাশি রয়েছে চিকিৎসক সংকট। একাধিকবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানালেও কোন সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। তবে, দু’মাসের মধ্যে এ সংকট অনেকটা কেটে যাবে বলেও তিনি জানান।’

বিডি প্রতিদিন/ মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর