স্ত্রী হত্যা মামলায় অভিযুক্ত শাহমীম ও তার সহযোগী রমিজুল আলম জাল নথি তৈরি করে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। ঘটনাটি জানার পর নাটোর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জামিন বাতিল করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। এই ঘটনায় নাটোরের আদালতপাড়ায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর নাটোরের সিংড়া এলাকার একটি বিল থেকে আগুনে ঝলসানো অজ্ঞাত যুবতীর মৃতদেহ পুলিশ উদ্ধার করে। লাশটি ছিল লালমনিরহাট জেলার মোস্তফি গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে রেজেনা পারভীন রুপালীর (২২)। এ ঘটনায় শাহমিম হোসেনকে (২৭) ফুলবাড়ী এলাকা ঘটনার দিনই আটক করে সিংড়া থানা পুলিশ।
বগুড়া মেরিস্টোপ ক্লিনিকে নার্সের চাকরির সুবাদে ফুলবাড়ী এলাকার যুবক শাহমিমের সাথে পরিচয় হয় রুপালীর। পরিচয় থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে ২০১৪ সালে তাদের বিয়ে হয়। কিছুদিন পর বিবাহ বিচ্ছেদ, পরে আবার তাদের দ্বিতীয়বারের মতো বিয়ে করেন তারা। সংসারে চলতে থাকে মনোমালিন্য। এক পর্যায়ে ২১ ডিসেম্বর বগুড়া থেকে ওই যুবতী নিখোঁজ হয়। পরে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের ভাদিগাড়ী এলাকার একটি ধানের জমি থেকে রুপালীর লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার দিন রাতেই সিংড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন রুপালীর বাবা।অভিযুক্ত শাহমিম হোসেন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেন যে তিনি নিজে শামীম ও রমিজুলের সহযোগিতায় স্ত্রী রুপালীকে এনে হত্যা করেন। পরিচয় গোপন করতে লাশ আগুন দিয়ে ঝলসে দেন। পরবর্তীতে পুলিশ শাহমীম, রমিজুল ও শামীমকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয়। অভিযুক্ত দুইজন কারাগারে আটক থাকা অবস্থায় ২০১৭ সালের ১৪ নভেম্বর মামলার নথি জাল করে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেয়।
বিষয়টি মামলার বাদি আব্দুর রাজ্জাকের নজরে আসলে চলতি বছরের ৯ এপ্রিল বিচারক একেএম আসাদুজ্জান ও বিচারক জেবিএম হাসানের আদালতে আপিল করেন। উচ্চ আদালত অভিযুক্ত দুইজনের জামিন আবেদন বাতিল করেন।
নাটোর আদালতের এপিপি এডভোকেট মেহেদী হাসান জানান, আজ সোমবার নাটোরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রুপালী হত্যা মামলার নির্ধারিত দিনে বিষয়টি নজরে আনেন মামলার বাদি আব্দুর রাজ্জাক। বিচারক রেজাউল করিম অভিযুক্ত দুইজনের জামিন বাতিল করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। মামলার নির্ধারিত দিনে অভিযুক্ত দুইজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
বিডি প্রতিদিন/২৩ এপ্রিল, ২০১৮/ফারজানা