২৪ এপ্রিল, ২০১৮ ১৫:৩৯

কিশোরীকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করায় তিন এনজিও কর্মী আটক

ফরিদপুর প্রতিনিধি:

কিশোরীকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করায় তিন এনজিও কর্মী আটক

বিদেশী দাতা সংস্থার অর্থায়নে যৌন কর্মীদের সন্তানদের সুরক্ষা এবং লেখাপড়ার দায়িত্বে থাকা স্থানীয় এনজিও শাপলা মহিলা সংস্থার বিরুদ্ধে এক কিশোরীকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে শাপলা মহিলা সংস্থার তিন কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার ফরিদপুরের আদালত পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। 

এরা হলেন, শাপলা মহিলা সংস্থার অফিস সহকারী রিনা সাহা (৩৮), অফিসের সিকিউরিটি গার্ড ইউনুস শেখ (৪০), আয়া রুবি আক্তার (৫০)। এছাড়াও আটক করা হয় পতিতা পল্লীর নারী সর্দার তানিয়া বেগমকে। এসময় পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য হওয়া ওই কিশোরীকে (১৬) উদ্ধার করা হয়েছে। আটককৃতদের কোতয়ালী থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। 

জানা গেছে, কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ থানার রুদ্রপুর গ্রামের নুরুল হকের মেয়ে লাকি আক্তার তার বাবার মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরতে চট্টগ্রামে একটি গার্মেন্টস কারখানায় কাজ নেন। গত রবিবার অন্যদিনের মতো সকালের শিফটে কাজে যাবার জন্য বাড়ি থেকে বের হলে এক ব্যক্তি বেশি বেতনে অন্য গার্মেন্টেসে কাজ দেবার কথা বলে। কথা বলার একপর্যায়ে লাকি আক্তারকে কোমল পানীয়র সাথে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাইয়ে অচেতন করে। পরে তাকে ফরিদপুরে নিয়ে আসে দালালচক্র। 

জ্ঞান ফেরার পর লাকি দেখতে পান সে ফরিদপুরের রথখোলা পতিতা পল্লীতে রয়েছেন। লাকি বলেন, সোমবার পতিতা পল্লীতে থাকা দুই নারী আমাকে সহযোগীতা করবেন বলে জানিয়ে অটোরিকশায় করে আদালত পাড়ায় নিয়ে যায়। আদালত পাড়ায় নেবার পর ঐ দুই নারীর কথা বার্তায় আমার সন্দেহ হয়। আমি বুঝতে পারি ওরা আমাকে নিয়ে কিছু করার চেষ্টা করছে। আমাকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করার জন্য আদালতে এফিডেভিট করা হবে এটি বুঝতে পেরে আমি খাবারের কথা বলে আদালত এলাকা থেকে বের হয়ে আসি। পরে হোটেলে গিয়ে চিৎকার শুরু করলে স্থানীয়রা তাদের আটকে রেখে পুলিশে খবর দেয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, শাপলা মহিলা সংস্থা দীর্ঘদিন ধরে পতিতা পল্লীতে কাজ করছে। পতিতাদের নিয়ে কাজ করার আড়ালে তাদের কর্মীরা নানা অপকর্মের সাথে জড়িত রয়েছে। বিষয়টি একাধিকবার পরিচালককে জানালেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি। 

শাপলা মহিলা সংস্থার পরিচালক চঞ্চলা মন্ডল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে যৌন কর্মীদের নানা বিষয় নিয়ে কাজ করছি। কিভাবে কি হয়ে গেল বুঝতে পারছিনা। বর্তমানে আমি ফরিদপুরের বাইরে আছি। এ বিষয়ে ফরিদপুরে এসে কথা বলবো।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম নাসিম জানান, প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে পতিতাবৃত্তির কাজের এফিডেভিট করতে তারা মেয়েটিকে আদালত পাড়ায় নিয়ে গিয়েছিল। মেয়েটির চিৎকারে স্থানীয় জনতা তাদেরকে ধরে ফেলে। খবর পেয়ে পুলিশ মেয়েটিকে উদ্ধার করে এবং এনজিও’র তিন কর্মী এবং পতিতা পল্লী থেকে আরো একজনকে আটক করা হয়। এ ব্যাপারে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।


বিডি প্রতিদিন/২৪ এপ্রিল ২০১৮/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর