২৮ মে, ২০১৮ ০৯:১১

রাঙামাটির সাজেকে গুলিতে ইউপিডিএফের তিন কর্মী নিহত

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

রাঙামাটির সাজেকে গুলিতে ইউপিডিএফের তিন কর্মী নিহত

রাঙামাটি জেলার সাজেকে দুর্বৃত্তের গুলিতে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট ইউপিডিএফের তিন কর্মী নিহত হয়েছে। নিহতরা হলেন সঞ্জীব চাকমা ওরফে চোগা (৪৫), স্মৃতি চাকমা (৫০), অটল চাকমা (৪০)। এ সময় আহত হয়েছে একই গ্রুপের কনক চাকমা নামে আরও একজন। নিহতরা সবাই ইউপিডিএফ ও গণতন্ত্রিক যুব ফোরামের সক্রিয় সদস্য।

সোমবার সকাল ৭টার দিকে বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের গঙ্গ্যারামমুখ কড়ল্যাছড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) রাঙামাটি জেলা ইউনিটের সংগঠক সচল চাকমা এ ঘটনার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির একাংশ অর্থাৎ এমএন লারমার গ্রুপ সংষ্কারপন্থী গ্রুপকে দায়ী করেছে। তবে এ ঘটনার সাথে নিজেদের জড়ির থাকার কথা অস্বীকার করেছে সংগঠনটি।

ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের প্রধান নিরন চাকমা স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানান, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির একাংশ অর্থাৎ এমএন লারমার গ্রুপ সংষ্কারপন্তির ১০/১২জনের একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের গঙ্গ্যারামমুখ কড়ল্যাছড়ি গ্রামে হানা দেয়। এসময় ইউপিডিএফ কর্মী সঞ্জীব চাকমা, স্মৃতি চাকমা, অটল ও কনক চাকমা ঘরে ঘুমিয়ে ছিল। সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি টের পেয়ে ঘর থেকে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় জঙ্গলে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা সশস্ত্র সন্ত্রাসী তাদের লক্ষ্য করে গুলি করে পালিয়ে যায়। এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে নিহত হয় ইউপিডিএফের কর্মী সঞ্জীত, স্মৃতি ও অটল। ইউপিডিএফর কর্মী কনক চাকমা গুলিবিদ্ধ হলেও প্রাণে বেঁচে যায়। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় যৌথ বাহিনীর একটি দল। বর্তমানে এলাকায় পরিস্থিতি থমথমে। স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এ ব্যাপারে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) রাঙামাটি জেলা ইউনিটের সংগঠক সচল চাকমা অভিযোগ করে বলেন, নেতা-কর্মী হত্যা করে ইউপিডিএফ-কে নিশ্চিহ্ন করতে দমন-পীড়ন চালানো হচ্ছে। কিন্তু কোন অপশক্তিই ইউপিডএফ’র অগ্রযাত্রাকে রোধ করতে পারেনি, ভবিষ্যতেও সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে ইউপিডিএফ তার লক্ষ্য বাস্তবায়নে অঙ্গীকারবদ্ধ। তিনি ইউপিডিএফ’র তিন সদস্যকে হত্যার সাথে জড়িত সংস্কারবাদী জেএসএস সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানান।

রাঙামাটির সাজেক থানার কর্মকর্তা (ওসি) মো. নূরুল আনোয়ার এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, ইউপিডিএফ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির একাংশ অর্থাৎ এমএন লারমার গ্রুপ সংষ্কারপন্থীদের মধ্যে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। যৌথবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে গেছে। লাশ উদ্ধার করে নিহতদের মরদেহ খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এলাকায় যৌথ বাহিনীর দল টহল জোরদার করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।

প্রসঙ্গত, গত ৩ মে পাহাড়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রাঙামাটি নানিয়ারচরে উপজেলা চেয়ারম্যান শক্তিমান ও পরদিন একই এলাকায় গণতান্ত্রিক-ইউপিডিএফের আহবায়কসহ ৬ জন দুর্বৃত্তদের গুলিতে খুন হয়। সে সময় আহত হয় প্রায় ৮ জন।

এদিকে, পাহাড়ে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর ভ্রাতৃঘাতি সহিংসতার একের পর এক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতার বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা।

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর