২১ জুন, ২০১৮ ১৪:৫৪

জোড়া-তালি দিয়ে চলছে গুরুদাসপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

নাটোর প্রতিনিধি

জোড়া-তালি দিয়ে চলছে গুরুদাসপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভেঙ্গে পড়েছে চিকিৎসা ব্যবস্থা। এর এ্যাম্বুলেন্সটা দীর্ঘদিন ধরে বিকল। এখানে গুরুদাসপুর উপজেলা এলাকা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী বড়াইগ্রাম, চাটমোহর, সিংড়া ও তাড়াশ উপজেলার রোগীদের ভিড় সবসময় থাকে। ৫০ শয্যাবিশিষ্ট ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৬ জন অভিজ্ঞ চিকিৎসক কর্তব্যরত থাকার কথা। আছে মাত্র ৫ জন। চিকিৎসক কম থাকায় হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তাও অফিসে বসে রোগী দেখছেন। সবমিলিয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ম অনুযায়ী ৯ জন কনসালটেন্ট, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, শিশু বিশেষজ্ঞ, অর্থপেডিকস, গাইনী বিভাগের চিকিৎসক থাকার কথা। কিন্তু ৪ জন কনসালটেন্ট দিয়ে চলছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। নেই কোনো ল্যাব এ্যাসিসটেন্ট। ইপিআই বিভাগে আছেন মাত্র এক জন টেকনিশিয়ান। তিনিও দক্ষ না হওয়ায় কোনো মতে জোড়া-তালি দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। রোগীদের চিকিৎসার জন্য আল্ট্রাসনোগ্রাম থাকলেও সঠিকভাবে তা ব্যবহারের জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কোন বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেয়া হয়নি। কর্তব্যরত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও মেডিকেল অফিসাররা দীর্ঘদিন যাবৎ আগত রোগীদের আল্ট্রাসনোগ্রাম করে চলছেন।

গুরুদাসপুর পৌরসদরের চাঁচকৈড়ের ব্যবসায়ী মো. সামসুল হক শেখ বলেন, ৫ উপজেলা থেকে প্রতিদিন শতাধিক রোগী জনবল সংকটের কারণে যথাযথ চিকিৎসা পাচ্ছেন না।

আবাসিক মেডিকেল অফিসারেরও অভাব। রবিউল করিম শান্ত নামের এক মেডিকেল অফিসার প্রশাসনিক কর্মকর্তার নির্দেশে মেডিকেল অফিসারের দায়িত্ব পালন করছেন। গাইনী বিশেষজ্ঞ শ্রদ্ধা নিবেদিতা পাল গত মে মাসের মাঝামাঝিতে যোগদান করেছিলেন। ৮ জুন থেকে এখনও ছুটিতে আছেন তিনি। 

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চক্ষু বিশেষজ্ঞ, সার্জারী বিশেষজ্ঞ, কার্ডিওলজিস্ট,সার্জারি বিশেষজ্ঞ ও নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ নেই। আবার জরুরি বিভাগে একজন অফিস সহকারী থাকার নিয়ম থাকলেও সেটাও নেই। সুইপার বা ঝাড়ুদার ৫ জনের মধ্যে রয়েছে ৩ জন। এর মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ একজন অসুস্থ। নিরাপত্তা প্রহরী ৩ জন থাকার কথা কিন্তু রয়েছে মাত্র ১ জন।

উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মুজাহিদুল ইসলাম জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে জনবল সংকট ছাড়াও বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে। তার মধ্যে এ্যাম্বুলেন্স সংকট, মুমূর্ষু রোগীদের চিকিৎসার জন্য নাটোর বা রাজশাহীতে রেফার্ড করতে অধিকাংশ সময় রোগী বহনকারী এ্যাম্বুলেন্সটি বিকল হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকে। রেফার্ড করা রোগীদের বহনের জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বেসরকারি ২-৩টি এ্যাম্বুলেন্স সব সময় অবস্থান করে।

তিনি আরও জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটিমাত্র এক্স-রে মেশিন এক যুগ ধরে বিকল। নতুন এক্স-রে মেশিনের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. আবদুল কুদ্দুস ডিও লেটার দিলেও সমস্যার সমাধান হয়নি।

এদিকে জরুরি ভিত্তিতে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলামের ব্যবহারের জন্য একটি গাড়ী বরাদ্দ দেয়ার কথা থাকলেও তা দেয়া হয়নি। সোহেল রানা নামের এক যুবককে ওই গাড়ীর ড্রাইভার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নিয়োগকৃত ড্রাইভার বসে বসেই সরকারি বেতন-ভাতা নিচ্ছেন।

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর