১৭ জুলাই, ২০১৮ ১৭:৫১

হালুয়াঘাটে জনপ্রিয় হচ্ছে 'মুড়ি' থেকে ধান চাষ পদ্ধতি

হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি:

হালুয়াঘাটে জনপ্রিয় হচ্ছে 'মুড়ি' থেকে ধান চাষ পদ্ধতি

বোরো ফসলের কেটে নেয়া ধান গাছের মুড়ি (স্থানীয় ভাষায় নাড়া) থেকে ধান ফলনের পদ্ধতি ধীরে ধীরে জনপ্রিয় উঠছে। এ চাষ পদ্ধতিতে চমক সৃষ্টি করেছেন ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী হালুয়াঘাট উপজেলার পশ্চিম কড়ইতলী গ্রামের কৃষকরা। এই পদ্ধতিতে ধান আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন আশপাশের গ্রামের কৃষকরাও। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে এবার উপজেলায় গাজিরভিটা, জুগলী, ভূবনকুড়া ও সদর হালুয়াঘাট ইউনিয়নের প্রায় ৩০ হেক্টর জমিতে মুড়ি ধানের আবাদ করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, চাষিরা ইরি বোরো কাটার পর পড়ে থাকা ধান গাছের নাড়া থেকে এক পদ্ধতিতে ধান চাষ করে ব্যাপকভাবে লাভবান হচ্ছেন। মুড়ি থেকেও যে ধান চাষ হয় এতোদিন সাধারণ কৃষকের মধ্যে সেই ধারনাই ছিল না। স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে এবার তারা এই ধান চাষ করে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছেন। কোনো প্রকার সেচ ও সার প্রয়োগ ছাড়াই শুধুমাত্র কয়েকবার কীটনাশক স্প্রে করেই তারা মুড়ি থেকে ধান উৎপাদন করছেন। ফলে এ পদ্ধতিতে ধান চাষ এলাকায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

এ বিষয়ে উপজেলার পশ্চিম গোবরাকুড়া গ্রামের কৃষক ইসহাক মিয়া জানান, বোরো মৌসুমে ১ বিঘা জমিতে বি আর-২৯ ধান চাষ করেন। ধানের ফলন হয় প্রায় ২০ মণ। এ বৎসর আশানুরূপ ফলন না হওয়ায় জমিতে পড়ে থাকা ধানগাছের গোড়া নষ্ট না করে পুনরায় ধান উৎপাদন করতে যত্ন নেন। গত বছর তিনি একই পদ্ধতিতে কোনো প্রকার সেচ ছাড়াই শুধু সামান্য পরিমাণে সার প্রয়োগ আর কয়েকবার কীটনাশক স্প্রে করে চাষকৃত এসব মুড়ি ধান থেকে তুলানামূলক ভালো ফলন পেয়েছেন।

স্থানীয় বর্ঘাচাষী কিতাব আলী জানান, আবাদী ২৫ কাঠা মাটিতে দু’দিন আগে তিনি পুনরায় কীটনাশক ও সার প্রয়োগ করেছেন। ধানের সতেজতার জন্য পরিমাণে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করা হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোন প্রকার ক্ষতি না হলে কমপক্ষে ২৫-৩০ মণ উৎপাদন করা সম্ভব। 

একই গ্রামের কৃষক আ. রাজ্জাক বলেন, এক সময় ধানের গোড়া কেটে গরু-ছাগলের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করতাম। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে কাটা ধানের গাছের গোড়া থেকে ধান ফসল উৎপাদনে আশা জাগিয়েছে। 

মুড়ি থেকে ধান চাষ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সুলতান আহম্মদ জানান, ধানের মুড়ি থেকে আবার ধান চাষ করা যায়। ধান কাটার পর একটু যত্ন নিতে পারলেই তুলানামূলক ফলন পাওয়া সম্ভব। এ বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে কৃষক মুড়ি থেকে ধান চাষ করছেন বলে জানান তিনি।


বিডি প্রতিদিন/১৭ জুলাই ২০১৮/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর