১৭ আগস্ট, ২০১৮ ২০:১৭

ঈদে কুয়াকাটায় হোটেলে আগাম বুকিং নেই, মালিকদের দুশ্চিন্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:

ঈদে কুয়াকাটায় হোটেলে আগাম বুকিং নেই, মালিকদের দুশ্চিন্তা

ফাইল ছবি

আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটায় পর্যটকদের তেমন কোন চাপ না হওয়ার আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ঈদুল আযহার আর মাত্র কয়েক দিন বাকি থাকলেও কুয়াকাটার আবাসিক হোটেলগুলোর ৩০ ভাগ কক্ষও আগাম বুকিং হয়নি। হোটেল ব্যবসায়ীদের ধারনা এবারের ঈদে পর্যটকের তেমন আগমন হবেনা সাগর কন্যা কুয়াকাটায়। 

আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির নেতারা বলছেন, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনের পরই নাগরিক জীবনে ভীতি এবং অস্বস্তিকর পরিবেশ বিরাজ করছে। যার প্রভাব পড়েছে পর্যটন বাণিজ্যে। 

কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব হোসেন শরীফ জানান, প্রতিবছর দুটি ঈদ উৎসবে কুয়াকাটায় পর্যটকদের ঢল নামে। গত ঈদুল ফিতরের পরবর্তী এক সপ্তাহ প্রতিদিন গড়ে ২৫ হাজার পর্যটক কুয়াকাটায় অবস্থান করেছে। তখন ঈদের এক সপ্তাহ আগেই বেশীরভাগ হোটেল আগাম বুকিং হয়ে যায়। কিন্ত এবার হোটেলগুলোতে পর্যটকদের আগাম বুকিংয়ের হার গড়ে ৩০ ভাগ।
 
কুয়াকাটার অন্যতম বিলাসবহুল আবাসিক হোটেল ‘নিলঞ্জনা’র কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, তার হোটেলে মোট ৩৯টি কক্ষ রয়েছে। রমজানের ঈদের আগে তার হোটেলের সবগুলো কক্ষ আগাম বুকিং হয়েছিল। এবার আগাম বুকিংয়ের অবস্থা তেমন একটা সুবিধাজনক নয় বলে দাবি তার। 

কুয়াকাটার আবাসিক হোটেল ‘বনানী’র তত্ত্বাবধায়ক আবদুল্লাহ-আল মাহমুদ জানান, তার হোটেলের ৩২টি কক্ষের মধ্যে ১৫ আগস্ট ১০টি এবং ১৬ আগস্ট মাত্র ৮টি কক্ষ আগাম বুকিং হয়েছে। 

সাধারণ হোটেলের চেয়েও আগাম বুকিংয়ে খারাপ অবস্থা কুয়াকাটায় থ্রি-স্টার মানের আবাসিক হোটেলের। থ্রি-স্টার মানের অন্যতম হোটেল ‘সিকদার রিসোর্টে’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক জয়নাল আবেদীন জানান, শুক্রবার পর্যন্ত তাদের হোটেলের শতাধিক কক্ষের একটিও আগাম বুকিং হয়নি। 

কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব হোসেন শরীফ জানান, তাদের সংগঠনভুক্ত হোটেল আছে ৬৫টি। ঈদের পরে পর্যটকদের আগাম বুকিংয়ের ক্ষেত্রে সবগুলোরই অবস্থা একই। 

এছাড়া কুয়াকাটায় সাধারণ মানের হোটেলগুলো মালিকদের পৃথক সংগঠন ‘কুয়াকাটা হোটেল মালিক সমিতি’র আওতাভুক্ত হোটেলের সংখ্যা ১২০টি। এই সমিতিভূক্ত একাধিক ব্যবসায়ী জানান, তাদের হোটেলগুলোতে আগাম বুকিং হয় কম। পর্যটকরা উপস্থিত হয়ে কক্ষ ভাড়া নেন। এবারের ঈদুল আযহায় পর্যটকদের তেমন চাপ না হাওয়ার আশংকা করেন তারা। 

কুয়াকাটায় পর্যটকদের নৌযানে সমুদ্র ভ্রমণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম হলো ‘সী-টুরিজম’। ঈদুল আযহায় কাঙ্ক্ষিত পর্যটক না আসার কারণ হিসেবে সী-টুরিজমের ব্যবস্থাপক হোসাইন আমির জানান, নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনের পরই কুয়াকাটায় পর্যটক কমে গেছে। তাছাড়া আগামী নির্বাচন ও সরকার বিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের পরিস্থিতি যেকোন সময় খারাপ হওয়ার ভীতি কাজ করছে মানুষের মধ্যে। 

এছাড়াও কুয়াকাটা যাওয়ার শেষ প্রান্ত কলাপাড়ার পাখিমারা বাজার থেকে হাজীগঞ্জ পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশার কারণে পর্যটকদের কুয়াকাটায় অনাগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় একটি কলেজের শিক্ষক শহীদুল ইসলাম শাহিন। 

তার মতে এই রুটের বাসের কর্মচারীদের দুর্ব্যবহার চরমে উঠেছে। এ কারণে পর্যটকরা একবারের বেশী কুয়াকাটামুখী হননা। পর্যটকদের নিরাপদ যাত্রার জন্য এই রুটে পর্যটক বাস চালুর দাবি জানান তিনি। 


বিডি প্রতিদিন/১৭ আগষ্ট ২০১৮/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর