১৮ আগস্ট, ২০১৮ ১৩:২৬

সিংড়ায় কাজ শেষ না হতেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং

নাটোর প্রতিনিধি:

সিংড়ায় কাজ শেষ না হতেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং

নাটোরের সিংড়ায় খরমকুড়ি থেকে শাহবাজপুর পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার পাকা সড়ক নির্মাণকাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির  অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, রাস্তার কার্পেটিং কাজের গুণগত মান খারাপ করা হচ্ছে। নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত পাথরে পিচ নেই বললেই চলে।  ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের ইট। সড়কের পিচঢালাই দেয়ার এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই তা উঠতে শুরু করেছে। পাথরের পরিবর্তে ইটের খোয়া ব্যবহার হচ্ছে। পিচ ঢালাইয়ে দুই ইঞ্চি পুরুত্ব করার কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।  রাস্তার পুরাতন পিচ উল্টিয়ে রোলার পিস্টে খোয়া হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাছাড়া রাস্তার অধিকাংশ জায়গায় ইটের সাইট ব্লক নেই। আর তড়ি ঘড়ি করে যত্রতত্র ভাবে কার্পেটিং করার পাথর উঠে যাচ্ছে। ময়লা ও মাটির উপরই করা হচ্ছে কার্পেটিং কাজ।

উপজেলা এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে সিংড়া উপজেলা গ্রামীণ রাস্তা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় খরমকুড়ি হতে শাহবাজপুর পর্যন্ত ১ কোটি ২ লক্ষ টাকা চুক্তি মূল্যে দেড় কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণের কাজ পান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এ কে এন্টার প্রাইজ। এ কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক নজরুল ইসলাম।

শুক্রবার সকাল ১১ টায় সরোজমিনে খরমকুড়ি গিয়ে দেখা যায়, রাস্তা ভালোভাবে পরিষ্কার না করেই ধুলা-ময়লার উপর কার্পেটিং কাজ করা হচ্ছে। আর কার্পেটিং কাজে ব্যবহৃত পাথরে কোন পিচ মিশ্রিত নেই বললেই চলে। রাস্তার অধিকাংশেই সাইডে কোন ইটের সাইট ব্লক নেই। কিছু কিছু জায়গায় ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের ইট। ২৫ মিলি কার্পেটিংয়ের পরিবর্তে ১৫ থেকে ২০ মিলিতে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। আর তড়ি ঘড়ি করে যত্রতত্র ভাবে কার্পেটিং করায় একটুতেই অনেক জায়গার কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে।

   নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীরা জানান, ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সহযোগিতায় অনিয়ম-দুর্নীতিতে কাজ করলেও দেখার কেউ নেই। আর এতে এলজিইডির প্রকৌশলীরাও সহযোগীতা করছে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। আর কেউ কাজের অনিয়ম নিয়ে কথা বললে তাদেরকে আইন, জেল-হাজতসহ বিভিন্ন হুমকি-ধামকিও দেয়া হচ্ছে।

     স্থানীয় কৃষক অলিউল অভিযোগ করে বলেন, কার্পেটিং এখনি উঠে যাচ্ছে। গতকাল তার বাড়ির সামনে কিছু কিছু জায়গায় কার্পেটিং উঠে গিয়েছিল। সকালে সেগুলো জোড়া তালি দিয়ে আবার কার্পেটিং করা হয়েছে। রাস্তা নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়টি এই তিন গ্রামের সবারই জানা। এখন আপনারাও জানলেন। দেখা যাক কী হয়।

কাজ তদারককারী উপ-সহকারী প্রকৌশলী গোলাম হোসেন এই প্রতিবেদককে বলেন, লিখেন যা খুশি লিখেন। কোন সমস্যা নেই। এখানে নিম্নমানের কাজের কোন কাহিনী নেই। আর যারা অভিযোগ করেছে তাদের নাম সহকারে লিখেন।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নজরুল ইসলাম বলেন, আমার জানামতে কাজ সুন্দর হচ্ছে। তারপরও কাজ খারাপ হলে ঠিক করে দেয়া হবে বলে জানান তিনি।

উপজেলা প্রকৌশলী হাসান আলী জানান, শুক্রবার ও শনিবার তিনি বাহিরে রয়েছেন। রাস্তা কার্পেটিংয়ে কোন অনিয়ম হলে আগামীকাল রবিবার পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি।

 


বিডি প্রতিদিন/১৮ আগষ্ট ২০১৮/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর