১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ২১:৫৮

পদ্মার ভাঙনে ন‌ড়িয়ায় ৬ হাজার পরিবার গৃহহীন

স্রোত কম থাকায় কমেছে ভাঙনে তীব্রতা

শরীয়তপুর প্র‌তি‌নি‌ধিঃ

পদ্মার ভাঙনে ন‌ড়িয়ায় ৬ হাজার পরিবার গৃহহীন

শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পদ্মা নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। তবে পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি ও স্রোত কম থাকায় ভাঙনের তীব্রতা কমেছে। আবার পানি কমতে শুরু করলে ভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পাবে বলে স্থানীয়রা জানান। 

রবিবার ও সোমবার ভাঙনে শুভগ্রাম, বাঁশতলা, দাস পাড়া, পূর্ব নড়িয়া ও উত্তর কেদারপুর গ্রামের ৬০টি পরিবার গৃহহীন হয়েছে। এ নিয়ে গত তিন মাসে পদ্মার ভাঙনে নড়িয়ার তিনটি ইউনিয়নে ও পৌরসভার দুটি ওয়ার্ডে প্রায় ছয় হাজার পরিবার গৃহহীন হয়েছে। কয়েক হাজার একর কৃষি জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। তবে ক্ষয় ক্ষতি‌র পরিমাণ এখনো নির্দিষ্ট করে বলতে পারেনি প্রশাসন । 

এ‌দি‌কে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে তিনটি খনন যন্ত্র দিয়ে সোমবার থে‌কে ন‌ড়িয়ায় এলাকায় চর কেটে নদী খননের কাজ শুরু করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত খনন কাজের জন্য এসে পৌঁছায়নি ড্রেজার। ‌যে ড্রেজার দি‌য়ে চর খনন করে পদ্মার স্রোত দক্ষিণ তীর হতে মাঝে নেয়া হবে। যাতে করে দক্ষিণ তীরের ভাঙন কমে যায়।

জানা যায়, শরীয়তপুরে পদ্মা নদীর ৩৯ কিলোমিটার তীর রয়েছে। এর মধ্যে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে নড়িয়ার মোক্তারেরচর, কেদারপুর, ঘড়িসার ইউনিয়ন ও নড়িয়া পৌরসভা, জাজিরার কুন্ডেরচর ইউনিয়নে। এসব এলাকায় ভাঙনে এবার ৮ হাজার পরিবার গৃহহীন হয়েছে। গত পাঁচ বছরে গৃহহীন হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার পরিবার। এই এলাকার মধ্যে নড়িয়ার সুরেশ্বর এলাকায় ১ কিলোমিটার লম্বা বাঁধ রয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে বাঁধটির ৫০ মিটার নদীতে বিলীন হয়। এবছর কয়েক হাজার কৃষি জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। 

ভাঙ্গন কবলিত ক্ষতিগ্রস্থরা বসত বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জিনিসপত্র সরিয়ে নিচ্ছে। বাজারগুলোর পাকা দোকানগুলো নিজেদের উদ্যোগে ভেঙ্গে ইট ও রড সড়িয়ে নিচ্ছে । ভাঙ্গন কবলিতদের মিলেনি এখনও পূর্নবাসনের ব্যবস্থা। আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটে বেড়াচ্ছে ভাঙ্গন কবলিত হাজার হাজার মানুষ। অনেকেই না খেয়ে পায়ের নিচে মাটি খুঁজে বেড়াচ্ছে। খোলা আকাশের নিচে বাস করছে অনেক পরিবার।

বাঁশতলা গ্রা‌মের ম‌নির হো‌সেন, দাসপাড়া গ্রা‌মের শুবাত্রা রানী পাল ব‌লেন, নদীতে প্রথমে আমা‌দের ফস‌লি জ‌মি নি‌য়ে যায়। প‌রে বা‌ড়িগু‌লো যখন ভাঙ‌তে শুরু করে তখন সকল মালামাল ও আসবাবপত্র স‌রি‌য়ে ‌নি‌য়ে‌ছি। কিন্তু ইট দি‌য়ে করা ঘর সরা‌তে পা‌রি‌নি তা নদী গ‌র্ভে চ‌লে গে‌ছে। ফস‌লি জ‌মি, বসত ঘর হা‌রি‌য়ে না খেয়ে পায়ের নিচে মাটি খুঁজে বেড়াচ্ছি। এখন খোলা আকাশের নিচে বাস করতে হ‌চ্ছে আম‌া‌দের। থাকা-খাওয়ার জন্য য‌দি এক‌টি আশ্র‌য় ‌পেতাম ভা‌লো হ‌তো।

এ ব্যাপা‌রে ন‌ড়িয়া উপ‌জেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে আশ্রয় কেন্দ্র ভাঙন কবলিতদের আশ্রয়ের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। ভাঙন কবলিত সব ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা হিসেবে চাল ও শুকনা খাবার ও টিন দেয়া হয়েছে। আর পূর্নবাসন সহায়তা হিসেবে টিন ও নগদ টাকা দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

বিডি-প্রতিদিন/ ই-জাহান

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর