১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ১৪:৫৩

ঠাকুরগাঁওয়ে ১০ শিক্ষার্থীর জন্য ৫ শিক্ষক

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

ঠাকুরগাঁওয়ে ১০ শিক্ষার্থীর জন্য ৫ শিক্ষক

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১০ শিক্ষার্থী দিয়ে চলছে পাঠদান কার্যক্রম। আর এই ১০ জন শিক্ষার্থীর পাঠদানের জন্য ওই বিদ্যালয়ে নিয়োজিত রয়েছেন ৫ জন শিক্ষক। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় সরেজমিনে বিদ্যালয়টিতে গিয়ে এ চিত্র দেখা যায়।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালে এই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হয়। বিদ্যালয়টির প্রথম শ্রেণিতে ২জন ছাত্রী, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ১জন ছাত্র ও ৩ জন ছাত্রী, তৃতীয় শ্রেণিতে ১ জন ছাত্র, চতুর্থ শ্রেণিতে ১জন ছাত্রী, পঞ্চম শ্রেণীতে ২জন ছাত্র ও ২ জন ছাত্রী মিলে ১২ জন কাগজে কলমে অধ্যায়নরত রয়েছে। এদের মধ্যে ২য় শ্রেণির এক ছাত্রী অভিভাবকসহ ঢাকায় গিয়ে অবস্থান করছেন এবং সেখানে স্কুলে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়াও ৫ম শ্রেনীর একজন শিক্ষার্থী কিছুদিন আগে ঢাকা চলে গেছেন।

বিদ্যালয়টির মনিটরিং বোর্ডের তথ্যানুযায়ী প্রধান শিক্ষক হিসেবে মো. মঞ্জুর মোরশেদ, সহকারী শিক্ষক হিসেবে আফতারুল ইসলাম, মনোরঞ্জন রায়, ফাইজার রহমান, আজমেরী আক্তার নামে ৫ জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয়টিতে ১০ জন শিক্ষার্থী থাকলেও এইসব শিক্ষার্থীর অনেকেই নিয়মিত স্কুলে আসে না। আর শিক্ষার্থী না থাকায় শিক্ষকরাও ঠিক মতো স্কুলে আসেন না; আর আসলেও গল্প-আড্ডা ব্যস্ত সময় পার করেন শিক্ষকরা। অথচ সরকার এসব শিক্ষকদের পেছনে লাখ লাখ টাকা ব্যয় করছে।

বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ফাইজার রহমান বলেন, চন্দ্রা গ্রামে জনবসতি কম হওয়ায় এই গ্রামে শিক্ষার্থী পাওয়া মুশকিল। বর্তমানে বিদ্যালয়ে ১০জন শিক্ষার্থী রয়েছে; তারা নিয়মিত স্কুলে আসেন এবং যত্নসহকারে তাদের পাঠদান করানো হয়।  

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মঞ্জুর মোরশেদ বলেন, শিক্ষার্থী বৃদ্ধির জন্য আমরা আশে-পাশের গ্রামের মানুষদের সাথে কথা বলছি। পাশের গ্রামগুলোর কিছু শিক্ষার্থী আমরা পাবো। আগামী বছরে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়বে। প্রধান শিক্ষক আড্ডা দিয়ে সময় পার করার বিষয়টি অস্বীকার করেন। 

বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলতে শ্রেণিকক্ষে যেতে চাইলে প্রধান শিক্ষক তাতে অসম্মতি জানান। 

প্রধান শিক্ষক মঞ্জুর বলেন, ‘ক্লাসে যাওয়া যাবে না। সমস্যা আছে। ক্লাসের ভিতরে যাওয়ার দরকার নেই। শ্রেণিকক্ষে যাওয়া নিষেধ আছে।' কে নিষেধ করেছে ? -জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শিক্ষা অফিসের নিষেধ আছে। শ্রেণিকক্ষে বহিরাগতরা প্রবেশ করতে পারবে না।' 

এ বিষয়ে পীরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, স্কুল চলাকলীন অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষক অথবা সহকারি শিক্ষকের অনুমতি নিয়ে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করা যায়। আর সাংবাদিকদের প্রবেশে কোনো নিষেধাজ্ঞা বা কোন নির্দেশনাও নাই। 

একটি সরকারি বিদ্যালয়ে মাত্র ১০জন শিক্ষার্থী এ প্রশ্নে তিনি বলেন, আমাদের উপজেলায় অনেক সরকারি বিদ্যালয় রয়েছে। এরমধ্যে চন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নতুন করে জাতীয়করণ হয়ে সরকারি হয়েছে। ওই এলাকায় জনবসতি কম হওয়ায় বর্তমানে শিক্ষার্থীও কম। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি করতে আমরা কাজ করছি। 

খোঁজখবর নেওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন ঠাকুরগাঁও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোফাজ্জল হোসেন।

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর