২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ১৬:২৭

রাঙামাটিতে অসহনীয় বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও লোডশেডিং

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

রাঙামাটিতে অসহনীয় বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও লোডশেডিং

রাঙামাটিতে অসহনীয় বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও লোডশেডিংয়ে অতীষ্ঠ এলাকাবাসী। চাহিদার অধিক বিদ্যুৎ পেয়েও সংকটে কাটেনি। ঘন ঘন লোডশেডিং ও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্রায় সময় থাকতে হচ্ছে বিদ্যুৎ বিহীন। এছাড়া রয়েছে অসহনীয় লো-ভল্টেজ। এমন পরিস্থিতিতে শহরবাসীর নাভিশ্বাস উঠেছে। সার্বক্ষণিক বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত স্বাভাবিক জনজীবন। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ বিতরণ নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও (ফেসবুকে) প্রতিবাদের ঝড় তুলেছে স্থানীয়রা। বিদ্যুতের এমন দুর্দশা দ্রুত সমাধান করা না হলে আন্দোলনে নামবে বলে হুমকি দেন রাঙামাটিবাসী।
রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মো. নাছির উদ্দীন সোহেল বলেন, দিন রাত অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ থাকে না। তার উপর শুক্রবার আর শনিবার তো রয়েছে। মাস জুড়ে এমন সমস্যার পরও বিদ্যুৎ বিল কখনো কম আসে না। এর একটা সুষ্ঠু সমাধান হওয়া উচিত।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে,  ১৯৬০ সালে রাঙামাটি কাপ্তাই উপজেলায় বাঁধ দিয়ে নির্মিত হয় দেশের প্রধান বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। এটি নির্মাণের ফলে রাঙামাটি পার্বত্য জেলার প্রায় ৫৪ হাজার একর চাষযোগ্য জমি পানিতে তলিয়ে যায়। উদ্বাস্তু হন লক্ষাধিক পরিবারের মানুষ। কিন্তু জেলাবাসীর এতটা ক্ষতিসাধিত হয়ে এ জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি নির্মিত হলেও শুরু থেকে ২৩০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন কেন্দ্রের উৎপাদিত সব বিদ্যুৎ নিয়ে যাওয়া হয় জাতীয় গ্রিডে। আর রাঙামাটির স্থানীয় জনগণকে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ বিতরণের শর্তে কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হলেও এর আগে রাঙামাটিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ দেয়া হতো সর্বোচ্চ ৫ মেগাওয়াট। ফলে বিদ্যুৎ সংকটে চরম ভোগান্তির শিকার হতেন রাঙামাটি জেলাবাসী। এ অবস্থায় রাঙামাটিবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রাঙামাটিতে সরবরাহ দেয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে, কাপ্তাই হ্রদের পর্যাপ্ত পানি থাকায় জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন বেড়েছে বলে জানিয়েছে দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ।
রাঙামাটি কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. শফি উদ্দীন আহমেদ বলেন, হ্রদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদনও বেড়েছে। কারণ অব্যাহত বৃষ্টিপাতে হ্রদে পানি রয়েছে ১০৬ ফুট উচ্চতায়। তাই কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট সচল রয়েছে। বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ১৯০ মেঘাওয়াট। তাই রাঙামাটি শহরের বিদ্যুৎ সংষ্কট হওয়ার কথা না।
এব্যাপারে রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ কান্তি মজুমদার জানান, সম্প্রতি যান্ত্রিক ত্রুটি কারণে কিছুটা সমস্যা ছিল। ফলে চাহিদা অনুসারে রাঙামাটি শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়া সম্ভব হয়নি। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে হঠাৎ ফল্ট দেখা দেয়। পাশাপাশি কোথাও সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে সেগুলোর সংস্কার তো রয়েছেই। যান্ত্রিক ত্রুটি দূর করা না গেলে নিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে পরিস্থিতির উত্তরণ সম্ভব হবে না। কিন্তু নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ দিতে রাঙামাটি সদরের সাপছড়ি এলাকায় একটি সাব-স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। সেটা চালু হলে এ সমস্যা আর থাকবেনা।

বিডি প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর