২০ অক্টোবর, ২০১৮ ১৭:১০

আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে এক মঞ্চে দোলন-কাজী সিরাজ-লিয়াকত-মোশা

নিজস্ব প্রতিবেদক

আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে এক মঞ্চে দোলন-কাজী সিরাজ-লিয়াকত-মোশা

নাটকীয় পরিবর্তন ঘটেছে ফরিদপুর-১ আসনে। মনোনয়ন ঘোষণার খুব বেশি দিন বাকি নেই। এর আগেই ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী ও মধুখালী উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী চার নেতা এক মঞ্চে। নৌকার জয় নিশ্চিত করতে তারা একাট্টা হয়েছেন। 

সভায় তৃণমূল নেতারা স্পষ্ট বলেছেন, আসন্ন নির্বাচনে আসনটিতে নৌকার প্রার্থী পদে পরিবর্তন আনতে হবে। বর্তমান সংসদ সদস্য আব্দুর রহমানকে মনোনয়ন দেওয়া হলে নৌকার ভরাডুবি হবে।  
 
শনিবার বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় নেতারা এমন আভাস দেন।

উপজেলা অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আরিফুর রহমান দোলন, সাবেক সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য কাজী সিরাজুল ইসলাম, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত শিকদার। 

সভাপতিত্ব করেছেন বোয়ালমারী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এম মোশাররফ হোসেন।

বর্ধিত সভায় অংশ নিয়ে তৃণমূল নেতারা তাদের বক্তব্যে বর্তমান সংসদ সদস্য আব্দুর রহমানের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে নানা অভিযোগ তুলে ধরেন। তারা বলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। তিনি সংসদ সদস্য হওয়ার পর দলীয় নেতাকর্মীদের রেখে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়েছেন। 

বঙ্গবন্ধুর সৈনিক আওয়ামী লীগের ত্যাগী ও প্রবীণ নেতাদের কোণঠাসা করে ফেলেছেন। তাদের বিরুদ্ধে অহেতুক মামলা-মোকদ্দমা দিয়ে হয়রানি করেছেন। তার আশেপাশে হাতে গোনা কয়েকজন লোক ছাড়া তিনি আর কাউকে চেনেন না। 

তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতারা আরও বলেন, সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান গত ১০ বছরে এলাকার উন্নয়নের দিকে নজর দেননি। বরং কীভাবে টিআর-কাবিখা লুট করা যায়, কীভাবে কাজ না করে বিশেষ বরাদ্দ লুট করা যায়, কীভাবে পুলিশ, নৈশ্যপ্রহরী, স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগ দিয়ে বাণিজ্য করা যায়- এসব নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। 

জনগণের অর্থ আত্মসাৎ করে তিনি আজ বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। শত শত বিঘা জমির মালিক হয়েছেন। আওয়ামী লীগের প্রকৃত নেতাদের অসম্মান করেছেন। সাধারণ মানুষ তার কাছ থেকে দু'র্ব্যবহার ছাড়া কিছুই পায়নি। তাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হলে নৌকার ভরাডুবি হবে। এই ভরাডুবি ঠেকাতে হলে নৌকার প্রার্থী পদে পরিবর্তন আনতে হবে। আব্দুর রহমান ছাড়া অন্য কাউকে মনোনয়ন দিতে হবে। 

উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন চৌধুরীর সঞ্চালনায় বর্ধিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, বোয়ালমারী পৌরসভার মেয়র মোজাফফর হোসেন মিয়া বাবলু, আলফাডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান এম এম জালাল উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের  কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সদস্য মোহাম্মদ আসাদুল করিম, আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একেএম আহাদুল হাসান, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেখা পারভিন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সুভাষ সাহা, জেলা পরিষদ সদস্য আবু জাফর সিদ্দিকী, শেখর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইস্রাফিল মোল্লা, সাতৈর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান, জেলা পরিষদ সদস্য শেখ সহিদুল ইসলাম, উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আকরামুজ্জামান মৃধা রুকু, মলয় কুমার বোস, রাহাদুল আকতার তপন, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ রাসেল রেজা, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান খসরু, রুপাপাত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আজিজার রহমান, দাদপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শামীম মোল্লা, ময়না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসির মোহাম্মদ সেলিম প্রমুখ। এছাড়াও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বর্ধিত সভায় উপস্থিত ছিলেন। 

বিডি প্রতিদিন/২০ অক্টোবর ২০১৮/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর