১২ নভেম্বর, ২০১৮ ২০:২৭

টেকনাফে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ঘাটের প্রস্ততি সম্পন্ন

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

টেকনাফে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ঘাটের প্রস্ততি সম্পন্ন

কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ঘাটের প্রস্ততি সম্পন্ন হয়েছে। জানা যায়, প্রত্যাবাসনের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার প্রথম দফায় ২ হাজার ২৬০ জন রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে প্রেরণ করা হবে। এজন্য মিয়ানমারের ছাড়পত্র পেয়ে ৫ হাজার ৫০০ জন রোহিঙ্গাদের মধ্য থেকে ৪৮৫টি পরিবারের ২ হাজার ২৬০ জন রোহিঙ্গাকে বাছাই করা হয়েছে। 

বাছাইকৃত পরিবারের সদস্যদের তালিকা মিয়ানমারের কাছে পাঠানো হয়েছে। মিয়ানমারের পক্ষ থেকে তাদের শনাক্তকরণের কাজও শেষ হয়েছে। এখন শুধু বাকি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা। বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয় দেশ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে একটি ঐকমত্যে পৌঁছেছে। সম্প্রতি দু’দেশের সমন্বয়ে গঠিত জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভায় এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়। 

আগামী ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের একটি দল মিয়ানমারে প্রবেশ করতে পারে। সে লক্ষ্যে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে টেকনাফের কেরুনতলী ও নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমে ২ টি ট্রানজিট ক্যাম্প প্রস্তত করা হয়েছে। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রস্তুতি হিসেবে টেকনাফ কেরুনতলী (নয়াপাড়া) রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ঘাটের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ঘাটে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য ৩৩ টি শেড, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের জন্য ৪ টি কার্যালয়, পর্যাপ্ত সংখ্যক টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে। 

ঘাট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের পূর্ব মুহূর্তে এখানে রাখা হবে এবং এই ঘাট থেকে তাদের মিয়ানমারে ফেরতের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে।

জানা যায়, চলতি বছর ফেব্রুয়ারী মাসে বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার একটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করা হয়। রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে উভয় দেশ ঐকমত্যে পৌঁছে স্মারকটিতে স্বাক্ষর করেছিল। চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ মিয়ামারের কাছে ৮ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা প্রেরণ করে। যাচাই-বাছাই শেষে মিয়ানমার ওই তালিকা থেকে ৫ হাজার ৫০০ জনকে প্রত্যাবাসনের ছাড়পত্র দেয়। সেই ছাড়পত্রের মধ্য থেকে প্রথম দফায় ২ হাজার ২৬০ জন রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে। 

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার এবং জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্য মো. আবুল কালাম বলেন, সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাবাসন কার্যক্রম শুরু করতে পারে। আমরা সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গাদেররে প্রথমে ট্রানজিট ক্যাম্পে নেয়া হবে। এরপর মিয়ানমারের প্রতিনিধিরা তাদের স্বদেশে স্বাগত জানাবেন।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল হাসান জানান, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে নির্ধারিত সময়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৩১ অক্টোবর বাংলাদেশ সফরে আসেন মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব মিন থোয়ে। ওই সময় তিনি কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেছিলেন, প্রত্যাবাসনের পর রোহিঙ্গাদের প্রথমে মংডু শহরে স্থাপিত আইডিপি শিবিরে নেয়া হবে। সেখানে তারা পাঁচ মাস থাকবে। এরপর নিজেদের গ্রামে ফেরত যেতে পারবে। মিয়ানমারের পক্ষ থেকে ফেরত যাওয়া রোহিঙ্গাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ মানবিক বিষয়গুলো নিশ্চিত করা হবে।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর