১৬ নভেম্বর, ২০১৮ ২০:০৩

উপকূলের কৃষক পরিবার প্রস্ততি নিচ্ছে নবান্নের

উত্তম কুমার হাওলাদার, কলাপাড়া(পটুয়াখালী)

উপকূলের কৃষক পরিবার প্রস্ততি নিচ্ছে নবান্নের

নতুন ধানের সঙ্গে মিশে আছে উপকূলের কৃষকের স্বপ্ন। ক্ষেতে জুড়ে উঁকি দিচ্ছে সোনালী ধানের শীষ। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন পাকা ধানের ঘ্রাণ বইছে। ফসল ঘরে তোলার আসায় প্রতিটি কৃষক পরিবারের চোখে মুখে লেগে আছে সোনালী স্বপ্ন পূরণের ছাপ। ক’দিন পরেই পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের কৃষকরা ক্ষেতের স্বপ্নের সোনালী ধান কাটা শুরু করবে। অধিকাংশ কৃষক পরিবার আগাম নবান্ন উৎসবের প্রস্ততিও নিয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা কোন বিপর্যয় না ঘটলে বাড়ির আঙ্গিনা সোনালি ধানে ভরে উঠবে এমন আশায় দিন গুণছেন হাজারো কৃষক।

কৃষি অফিসের তথ্য সূত্রে জানা যায়, কলাপাড়া উপজেলার আয়তন ৪ লাখ ৯২ হাজার ১০২ বর্গ কিলোমিটার। মোট কৃষি জমির পরিমাণ ৪৯ হাজার ২১০ হেক্টর। যার মধ্যে কৃষি জমি ৪০ হাজার ৯৪০ হেক্টর। এবছর উফসী জাতের ২৪ হাজার ১০০ হেক্টার ও স্থানীয় জাতের ১০ হাজার ৪০০ হেক্টার জমিতে আমন আমন ধানের আবাদ হয়েছে।

সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রত্যন্ত গ্রাম-গায়ের কৃষকরা ধান কাটার অপেক্ষায়। বাতাসে সোনালি ধানের শিষ দুলছে। ক্ষেতের মধ্যে পোতা বাঁশের কঁঞ্চি ও গাছের ডালের উপর ফিঙ্গে, শালিক, দোয়েলসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি বসে আছে। সুযোগ বুঝে ধানক্ষেতের ক্ষতিকারক পোকা ওইসব পাখিরা খেয়ে ফেলছে। আবার অনেকে অধিক ধান পাওয়ার আশায় নিজ নিজ জমিতে রাসায়নিক ও জৈব সার প্রয়োগ করছে। কেউ আবার ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছে। তবে কখন নতুন ধান ঘরে তুলবে এ স্বপ্নে বিভোর উপকূলের ওইসব কৃষকরা। তবে আর কিছু দিন পর ধান কাটা শুরু হবে। তাই প্রতিটি বাড়ি বাড়ি চলছে নতুন ধান ঘরে তোলার নবান্ন উৎসবের প্রস্তুতি।

একাধিক কৃষক জানিয়েছে, এ বছর জমি চাষ থেকে শুরু করে রোপণ ও ক্ষেতের নিয়মিত পরিচর্যা করায় ফসলও ভালো হয়েছে। তবে দেখা দিয়েছে ক্ষেতে ইদুরের উপদ্রব।

কৃষক আব্দুল লতিফ জানান, অতি বৃষ্টি বা অতিরিক্ত খরা না থাকায় এবছর তেমন কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি। রোগ-বালাই ও পোকায় বেশি একটা আক্রমণ করতে পারেনি। তবে প্রকৃতি অনুকূলে থাকলে স্বপ্নের সোনালী ধান যথাসময়ে ঘরে তুলতে পারবে এমন আশা করেছেন তিনি। 

অপর এক কৃষক মন্নান মুসল্লী জানান, তিনি ৮ একর জমি চাষ করেছেন। ফসলও ভাল হয়েছে। আর কয়েক দিন পর তিনি ধান কাটা শুরু করবেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মন্নান জানান, এ বছর আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এখন পর্যন্ত ক্ষেতে রোগ-বালাইয়ের প্রকোপ নেই। দুই চার দিনের মধ্যে কৃষকদের ধান কাটার উৎসব শুরু হবে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে কৃষকরা বাম্পার ফলন পাবে এমনটাই তিনি আশা করেছেন।

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর