২২ জানুয়ারি, ২০১৯ ১৩:৪৪

ঠাকুরগাঁওয়ে রাস্তা সংস্কারের ১০ দিনেই উঠে যাচ্ছে পাথর

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

ঠাকুরগাঁওয়ে রাস্তা সংস্কারের ১০ দিনেই উঠে যাচ্ছে পাথর

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের কালমেঘ বারঢালী বাজার থেকে মিলটেক হয়ে দুর্গাপুর পর্যন্ত সাড়ে ৪ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে ১০ দিন আগে।

এরই মধ্যে রাস্তার দুপাশে বেশ কয়েকটি জায়গায় দেখা দিয়েছে ফাঁটল এবং বেশির ভাগ রাস্তার মাঝখান থেকে উঠে যাচ্ছে পাথরের দেওয়া ঢালাই। তবে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা প্রকৌশলী মাইনুল ইসলাম এ বিষয়ে কর্ণপাত করছেন না। তার কথায়, এগুলো কোনো বিষয় না। দু-এক জায়গায় ঢালাই উঠতেই পারে। 

উপজেলা প্রকৌশলী আরও জানান, প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে কালমেঘ বারঢালী হতে মিলটেক হয়ে দুর্গাপুর পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার নতুন পাকা রাস্তা নির্মাণ এবং সাড়ে ৪ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার দুটো কাজই পেয়েছে স্থানীয় নামধারী একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। সাড়ে ৪ কিলোমিটার রাস্তার সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে গত ১০ দিন হলো। অন্য রাস্তার নির্মাণ কাজ চলছে। 

পথচারী অটোবাইক চালক করিম উদ্দীন জানান, সংস্কারের আগেই রাস্তাটি ভাল ছিল। সংস্কারের পর পাথরগুলো উঠে যাওয়ায় অটোবাইক চালাতে চরম সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। একই অভিযোগ ওই এলাকার হাসান, কমিরুল, হালিম উদ্দীনের। 

এলাকাবাসীর কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রাস্তা সংস্কার করা হবে শুনে খুব খুশি হয়েছিলাম। ঠিকাদার মেশিন, যন্ত্রপাতি নিয়ে আসলো সেটাও দেখলাম। কিন্তু দু-দিনের মধ্যেই সাড়ে কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার শেষ হয়ে গেলো এবং ঠিকাদার সবকিছু নিয়েও চলে গেলো। 

রাস্তার দু’পাশে ফাঁটলের কথা ঠিকাদারের লোকজনকে জানাতে গেলে এলাকার লোকজনকে ধমক দিয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। তাদের বলা হয়েছে, রাস্তা সংস্কার হচ্ছে এটাই বড় কথা, বেশি কথা বলতে আসলে খবর আছে। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রাস্তার মাঝ খানে ঢালাই উঠে গর্ত হয়ে গেছে। দেখা যাচ্ছে পূর্বের রাস্তা। ঢালাই উঠে যাওয়ার ছোট ছোট পাথরগুলো রাস্তার উপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। বাইসাইকেল কিংবা মোটরসাইকেল চলাচলের সময় পিছলে গিয়ে যে কোনো বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এছাড়াও রাস্তার দু’পাশে ফাঁটল মাটি দিয়ে ঢেকে দিয়েছে ঠিকাদারের লোকজন। 

দুওসুও ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম বলেন, সঠিক তদারকির অভাবে রাস্তাগুলোর কাজের মান দিন দিন নিচে নেমে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের কল্যাণে এসব উন্নয়ন কাজ করছে। কিন্তু কিছু ঠিকাদার এবং তদারকি কর্মকর্তার উদাসীনতার কারণে সরকারের এসব উন্নয়ন ম্লান হচ্ছে। আর সাধারণ মানুষ এ জন্য সরকারকে দায়ী করছে। 

কাজ বাস্তবায়নকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধিকারীর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। 

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা প্রকৌশলী মাইনুল ইসলামের নিকট রাস্তায় ফাঁটল ধরেছে এবং ঢালাই উঠে যাওয়ার বিষয়টি তিনি জানেন কি না? এ বিষয়ে মুঠোফোনে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, দু-এক জায়গায় ঢালাই উঠতেই পারে। এগুলো কোনও বিষয় না। তাছাড়া ঠিকাদারের কাছ থেকে ১০ ভাগ টাকা কেটে রাখা হয়েছে। যদি রাস্তায় কোনও সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে সে টাকা দিয়ে পুনরায় রাস্তাটি সংস্কার করা হবে। 

তিনি আরও বলেন, ওই ঠিকাদার নতুন রাস্তা নির্মাণের কাজ করছেন। সেই কাজ শেষ হলে যে জায়গাগুলোতে ঢালাই করা পাথর উঠে যাচ্ছে, ফাঁটল ধরেছে সেগুলো পুনরায় সংস্কার করে দেওয়ার কথা বলবো। 

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর