বিএনপি ছাড়ছেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বগুড়া জেলা কমিটির উপদেষ্টা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শোকরানা। রাজনীতি ছাড়ার পাশাপাশি তার স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে

বগুড়া ছেড়ে কানাডায় স্থায়ী হওয়ার চেষ্টা করবেন। 

শোকরানার ঘনিষ্টজনরা বলছেন, তিনি আর রাজনীতি করবেন না। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন না পেয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা ও ব্যবসায়ী সাবেক যুবলীগ নেতা শোকরানা ১৯৯৯ সালে বিএনপির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হাতে ফুল দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দেন। তিনি দেশ স্বাধীনের আগে বগুড়ায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের তুখোড় নেতা ছিলেন। যুবলীগ নেতা হিসেবে তিনি
মহান মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশ নেন। স্বাধীনতার পর তিনি দীর্ঘদিন রাজনীতির আড়ালে থাকার পর আশির দশকে তিনি ব্যবসাকে পেশা হিসেবে নিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। বগুড়ার এই সফল ব্যবসায়ী বিএনপিতে যোগদানের পর তিনি দলের সুসময় ও দুঃসময়ে পাশে ছিলেন। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তিনি গ্রেফতার হন।
২০০৮ সালের ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি- সোনাতলা) আসনে প্রতিদ্বন্দিতা করে হেরে যান। এরপরও তিনি দলের সকল কর্মকাণ্ডে সক্রিয় থেকে নেতাকর্মী ও দলের পাশে ছিলেন। এখন থেকে তিনি আর দলের সাথে থাকছেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।

দলের দুঃসময়ের কান্ডারী হিসেবে পরিচিত এ নেতা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-১ আসনে দলের মনোনয়ন না পেয়ে চরম হতাশ ও ক্ষুদ্ধ হন। এ নির্বাচনে দলের সাবেক এমপি কাজী রফিকুল ইসলামকে বিএনপির মনোনয়ন দেয়া হয়। শোকরানা দলে নিজের মূল্যায়ন না পেয়ে দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
একই সাথে বগুড়ার ছিলিমপুরস্থ তার মালিকানাধীন ফোর স্টার হোটেল নাজ গার্ডেন ও শহরের বাদুরতলাস্থ বাসভবনসহ সকল সম্পত্তি বিক্রির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ওই প্রতিষ্ঠান ও বাড়ি বিক্রি করতে কয়েক দফা বিভিন্ন জনের সাথে কথাও বলেছেন। বর্তমানে এসব সম্পদ কেনাবেচার দরদাম চলছে। সম্পত্তিগুলো বিক্রি করে তিনি কানাডায় চলে যাবেন। কানাডায় বসবাসরত বড় ছেলের কাছে
স্থায়িভাবে যাচ্ছেন শোকরানা। শনিবার ভোর ৬টা ৫৫মিনিটের ফ্লাইটে ঢাকা থেকে কানাডায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়বেন। তিনি সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। সেখানে তিনি অবস্থান করবেন, মাঝে  দেশে আসলেও রাজনীতি নিয়ে কোন আগ্রহ দেখাবেন না বলে তার ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন।

বগুড়া জেলা বিএনপির উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শোকরানা জানান, দল ছাড়া নয়, রাজনীতি থেকে অবসরে যাচ্ছি। যদিও রাজনীতিতে অবসর হয় না। তাই রাজনীতি থেকে একেবারে সরে যাচ্ছি। পরিবারকে সময় দিতে পারিনি এতদিন। এখন পরিবারের সদস্যদের হক আদায় করবো। আমার বয়স হয়েছে। এই বয়সে আর রাজনীতি করার ইচ্ছে নেই। দেশের ও দেশের মানুষের জন্য করার চেষ্টা করেছি। বয়স হয়ে যাওয়ার কারণে এখন রাজনীতি থেকে দূরে যাচ্ছি। তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন