১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ১০:৪১

স্ত্রীর লাশ শ্বশুর বাড়িতে পাঠালেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান!

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:

স্ত্রীর লাশ শ্বশুর বাড়িতে পাঠালেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান!

প্রতীকী ছবি

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মানিক কুমার দেবের বিরুদ্ধে চার  মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে পিটিয়ে গলা টিপে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে।

নিহতের নাম লিপি নারী দেব। তিনি জেলার নাসিরনগর উপজেলার সদরের দত্তপাড়া এলাকার তুলসি রঞ্জন দেবের মেয়ে। লিপির মগ্ন চন্দ্র দেব নামে আট বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।

নিহতের পরিবারের অভিযোগ, নিহতের স্বামী লিপিকে হত্যা করেছে। তাই তাঁর লাশ কিশোরগঞ্জে না রেখে পারিবারের কাউকে না পাঠিয়ে প্রতিবেশীকে দিয়ে নাসিরনগরে পাঠিয়েছে। তিনি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে এমনটি করেছেন।

জানা যায়, ১২ বছর আগে অষ্টগ্রামের দুর্গামোহন দেবের ছেলে মানিক চন্দ্র দেবের সঙ্গে পারিবারিকভাবে লিপির বিয়ে হয়। বিয়ের দুই বছর পর তাদের একটি ছেলে সন্তান হয়। তবে সে কয়েকদিন পর মারা যায়। এর দুই বছর পর মগ্ন’র জন্ম হয়। বিয়ের পর থেকেই পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ঝগড়া হতো।

শুক্রবার বিকেলে স্বামীর বাড়ি অষ্টগ্রাম উপজেলার অষ্টগ্রামে বাড়ির রাস্তা নিয়ে স্বামী ননদের সঙ্গে লিপির ঝগড়া হয়। এসময় স্বামী মানিক স্ত্রীর বিরুদ্ধে গিয়ে বোনদের পক্ষ নেয়। এক পর্যায়ে মানিক ঘরে স্ত্রীকে মারধর করে হত্যা করে।

মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে নিহতের স্বামী মানিক চন্দ্র দেবের পরিবর্তে তার চাচাতো ভাই বিদ্যুৎ চন্দ্র রায় বলেন, মানিক অসুস্থ। মানিক আগামী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী। শুক্রবার তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন। আর তার নিহত স্ত্রী লিপি দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে অসুস্থ। এজন্যই তার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

তবে নিহতের বড় ভাই চন্দন দেব অভিযোগ করে বলেন, মানিক দেব প্রায় সময় পারিবারিক কলহের জের ধরে লিপিকে মারধর করত। শুক্রবার বিকেলে মানিক পারিবারিক বিষয় নিয়ে বিষ পান করিয়ে লিপিকে হত্যা করেছে। পরে তাঁকে অষ্টগ্রাম থেকে স্পীডবোডের মাধ্যমে এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে নাসিরনগর পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় তিনি বোন জামাতার বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করবেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের দায়িত্বে থাকা আবাসিক চিকিৎসক আজহারুল রহমান বলেন, হাসপাতালের আনার আগেই ওই নারী মৃত্যু হয়েছে। তবে তার মুখে বিষক্রিয়ার কোনো আলামত দেখা যায়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বলা যাবে।

অষ্ট্রগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, নিহতের সংবাদ পেয়েছি। তবে এ বিষয়ে থানায় কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া লেগে ওই নারী বিষ পান করে আত্মহত্যা করেছে।


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর