নাটোরে শিলা বৃষ্টিতে গম, ধান, পান, আম, জামসহ উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কয়েক ঘণ্টা ধরে বরফে ঢাকা পড়ে থাকে শত শত হেক্টর রবি ফসলের জমি। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষকরা।
রবিবার ভোর রাত ৫ টার দিকে হঠাৎ করে বজ্রসহ শিলা বৃষ্টি শুরু হয়। প্রায় ৩০ মিনিটের এই শিলা বৃষ্টিতে জেলার নলডাঙ্গা উপজেলার নলডাঙ্গার হালতি ও সিংড়ার চলনবিলের বিস্তির্ণ বরো ফসলের মাঠ এবং সদর উপজেলার ছাতনী, হরিশপুর, কাফুরিয়া প্রভৃতি গ্রামের গম, পিয়াজ, সবজি ও পানের বরজসহ উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ব্যাপকহারে শিলা বৃষ্টি হওয়ায় ফসলের জমি বরফে ঢেকে থাকে কয়েক ঘণ্টা। শিলা বৃষ্টিতে কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল বিনষ্ট হয়েছে
বলে দাবি করেছে কৃষকরা। তবে ক্ষতি নিরুপণে মাঠে নেমেছে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারা বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক।
কৃষক শাজাহান আলী জানান, তার তিন বিঘা জমির গম সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। শিলা বৃষ্টিতে ক্ষতির মুখে পড়া ছাতনী, মোমিনপুর, কেশবপুর, নলডাঙ্গার হালতি, সোনাপাতিল, সিংড়া উপজেলার ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা করছেন বিলাপ। এছাড়া শিলা বৃষ্টিতে জেলার প্রায় অধিকাংশ এলাকার
আমের মুকুল ঝড়ে পড়েছে। ভুট্টার গাছ হেলে পড়েছে, পানের বরজের পানও ঝড়ে পড়েছে। এসব গ্রামের অনেকের বাড়ির টিন শিলার আঘাতে বিনষ্ট হয়েছে।
এদিকে নাটোরের সিংড়ায় রবিবার ভোর রাতে শিলাবৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় ঘরবাড়ি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নে কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে চৌগ্রাম, তাজপুর, লালোর, শেরকোল, ডাহিয়া, সুকাশ, ইটালী ইউনিয়নে শিলাবৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে।
জানা যায়, রবিবার ভোর ৫. ২০মিনিটে হঠাৎ শিলাবৃষ্টি ও দমকা ঝড় শুরু হয়। এসময় প্রায় ২০ মিনিট স্থায়ী একটানা শিলাবৃষ্টিতে মাঠ, রাস্তা, বারান্দায় স্তুপ পড়ে যায় বরফের।
উপজেলা কৃষি অফিসার সাজ্জাদ হোসেন জানান, শিলাবৃষ্টির কারণে ফসলসহ বিভিন্ন সবজি বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতি নিরুপণ করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুশান্ত কুমার মাহাতো জানান, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হচ্ছে, সরকারিভাবে সহযোগিতা করা হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম আকস্মিক শিলা বৃষ্টিতে রবি ফসলের ক্ষতির হওয়ার সম্ভাবনার সত্যতা স্বীকার করলেও তাৎক্ষনিকভাবে ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেননি। তবে তিনি জানান, কি পরিমাণ জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তা নিরুপনে তিনি সহ কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে রয়েছেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল