১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ১৩:৫৩

ঝিনাইদহে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে পেয়ারার পর বাউকুলে সফলতা

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

ঝিনাইদহে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে পেয়ারার পর বাউকুলে সফলতা

প্রযুক্তির নতুন নতুন ব্যবহারে বদলে যাচ্ছে দেশের কৃষি ব্যবস্থা। প্রতিনিয়ত এই প্রযুক্তির ব্যবহারে দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। আর এই এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে দেশের অন্যান্য খাতের মতো কৃষির অবদানও অনেক। কৃষিতে বিপ্লব নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মোচন করেছে। আর এই বিপ্লবের পেছনে কৃষি-সংশ্লিদের সঙ্গে সাধারণ কৃষক যেমন জড়িত, তেমনি প্রযুক্তির অবদান রয়েছে ব্যাপক। এরকমই এক প্রযুক্তি বাউকুলে পলিথিনের ব্যবহার। 

নিরাপদ খাদ্য উপৎপাদনে এই পদ্ধতি অপরিহার্য উপাদান হিসাবে কাজ করছে। পেয়ারায় এই পদ্ধতি ব্যবহার করে দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের জেলার গুলোর কৃষকেরা ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে।  ঠিক সেই একই পদ্ধতি বাউকুলে ব্যবহার করে সফলতা  অর্জন করেছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে কৃষক রশিদ মিয়া। তার এই পদ্ধতিতে ৬-৭টি কুলে এক কেজি ওজন হচ্ছে। দামও পাওয়া যাচ্ছে ভালো। সাধারণভাবে উৎপাদিত বাউকুল প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৩০-৭০ টাকা। আর পলিথিন পদ্ধতিতে উৎপাদিত কুল প্রতি কেজি ৮০-১০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে জেলায় ৩০৮ হেক্টর জমিতে কুল চাষে ৪,২৯৬ মেট্রিক টন কুল উৎপাদন হয়েছে। জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার রাখালগাছি-চাঁদপাড়ার মাঠে হারুনার রশিদ নামে এক কৃষক বাউকুলে পলিথিন ব্যবহার করে সফলতা পেয়েছেন। হারুন কালীগঞ্জ উপজেলার সানবান্ধা গ্রামের মৃত শাহাদত হোসেনের ছেলে। কুলে পলিথিন ব্যবহারের ফলে কোন কীটনাশক দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। ফলে বিষমুক্ত এই কুল সাধারণ বাউকুল থেকে মিষ্টি ও নরম। যে কারণে বাজারে চাহিদাও বেশি।

হারুনার রশিদ বলেন, ‘আমি গত ১০ বছর ধরে বাউকুলসহ বিভিন্ন প্রজাতির কুল ও পেয়ারার চাষ করে আসছি। এ বছর আমার সাড়ে চার বিঘা জমিতে বাউকুল চাষ করেছি। পেয়ারায় পলিথিন পদ্ধতি ব্যবহার করে যদি ভালো উৎপাদন হয়। তাহলে কুলেও ভালো ফলন হওয়ার কথা। এমন চিন্তা থেকে কুলে পলিথিন পদ্ধতি ব্যবহার করি। কিছুদিনের মধ্যে খুব ভালো ফলাফল লক্ষ্য করি। পলিথিন ব্যবহারে উৎপাদিত কুলের সাইজ দেখে অবাক হচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন বাগান থেকে ৮-১০ মন কুল সংগ্রহ করছি। সেসব কুল ৮০ টাকা কেজি দরে ঢাকার ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করি। প্রথম কয়েকদিন ১০০ টাকা কেজি বিক্রি করেছিলাম। সাধারণভাবে উৎপাদিত বাউকুল থেকে বছরে প্রতি বিঘা জমিতে ২ লাখ টাকার মতো বিক্রি করা যায়। এতে চারা রোপণ থেকে শুরু করে ফল সংগ্রহ পর্যন্ত খরচ হয় ৩০ হাজার টাক। কিন্তু একই খরচে এ পলিথিন পদ্ধতি ব্যবহার করায় এ বছর প্রতি বিঘা জমিতে ৩ লাখের বেশি টাকার কুল বিক্রি করা যাবে।’

বিকশিত বাংলাদেশের কর্মী আনোয়ারুল ইসলাম টিটু জানান ‘বিষমুক্ত নিরাপদ ফল উৎপাদনের লক্ষ্যে কুল চাষের জন্য তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৪০০ কেজি ভার্মি কম্পোস্ট, ২২টি ফেরেমন ট্রাফ, ফসল সংগ্রহের জন্য প্লাস্টিকের ত্রিপল ও বাস্কেট দেওয়া হয়েছে। এখন তাকে সংগ্রহ করা কুল ঢাকার বাজারে বিক্রির কাজে সহযোগিতা করা হচ্ছে।

 

বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ তাফসীর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর