২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ১০:৩০

টেকনাফে আনসার ক্যাম্পের অস্ত্র লুট মামলার প্রধান আসামিসহ নিহত ২

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

টেকনাফে আনসার ক্যাম্পের অস্ত্র লুট মামলার প্রধান আসামিসহ নিহত ২

কক্সবাজারের টেকনাফে র‌্যাব ও বিজিবির সাথে পৃথক বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় নুরুল আলম (৩৫) নামের এক ডাকাত এবং বিল্লাল হোসেন নামে একজন ডাকাত নিহত হয়েছেন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ইয়াবা, ২টি বিদেশি পিস্তল, ২টি ম্যাগাজিন ও ১৩ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত এবং বৃহস্পতিবার ভোররাতে হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া ও সাবরাং ইউপির সাবরাং কাটাবুনিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এদের মধ্যে রোহিঙ্গা নুরুল আলম টেকনাফের নয়াপাড়া আনসার ক্যাম্পের অস্ত্র লুট ও আনসার কমান্ডার আলী হোসেন হত্যা মামলার প্রধান আসামি। 

কক্সবাজার র‌্যাব-১৫ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান বলেন, রাতে র‌্যাবের একটি বিশেষ টহলদল হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া এলাকায় কিছু লোককে দেখে  চ্যালেঞ্জ করলে তারা র‌্যাবের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। র‌্যাবও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। এ সময় অন্যরা পালিয়ে গেলেও ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একজনকে উদ্ধার করা হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়। পরে র‌্যাব রোহিঙ্গা ডাকাত নুরুল আলমের লাশ শনাক্ত করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘র‌্যাব জানতে পারে, টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থিত আনসার ক্যাম্পের অস্ত্র লুট ও আনসার কমান্ডার আলী হোসেনের হত্যা মামলার প্রধান আসামি এই নুরুল আলম। সে দীর্ঘদিন পলাতক ছিল।

টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল গেয়ে লাশটি উদ্ধার করে। নিহত রোহিঙ্গা ডাকাতের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। সুরুতাহল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২০১৬ সালের ১২ মে রাতে রোহিঙ্গা সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দায়িত্বে নিয়োজিত আনসার ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে আনসার কমান্ডার আলী হোসেনকে হত্যার পর ৬০০ রাউন্ড গুলি ও ১৩টি অস্ত্র লুট করে নিয়ে যায়। পরে মিয়ানমার সীমান্তের ঘুংধুম এলাকার গহীন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে লুট হওয়া পাঁচটিসহ ১৩টি অস্ত্র ও ৯৫ রাউন্ড গুলি নিয়ে তিন রোহিঙ্গাকে র‌্যাব গ্রেফতার করে।

এদিকে, টেকনাফে বিজিবির ও চোরাকারীদের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে এক ইয়াবা ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। টেকনাফ ২ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আছাদুদ-জামান চৌধুরী জানান, বহস্পতিবার রাতে কক্সবাজার ৩৪ বিজিবি কর্তৃক মরিচ্যা চেকপোস্টে লক্ষীপুর জিএমহাট শাকচর এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে মো. বিল্লাল হোসেনকে (২৫) ইয়াবাসহ আটক করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা যায় যে, বিপুল পরিমাণ ইয়াবা শুক্রবার ভোররাতে সাবরাং ইউপির সাবরাং কাটাবুনিয়া এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে টেকনাফ  ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের নায়েক মো. হাবিল উদ্দিন ও কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির নায়েব সুবেদার মো. ওহিদুল ইসলামের নেতৃত্ব যৌথ টহলদল দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ওঁৎ পেতে থাকে। কিছুক্ষণ পর একদল ব্যক্তিকে দেখে টহলদল তাদের চ্যালেঞ্জ করে। টহলদলের উপস্থিতি লক্ষ্য করা মাত্রই চোরাকারবারী দলের লোকজন টহলদলের উপর অতর্কিতভাবে গুলি বর্ষণ করতে। এতে বিজিবি যৌথ টহলদল আত্নরক্ষার্থে কৌশলগত অবস্থান নিয়ে পাল্টা গুলি বর্ষন করে। গুলির শব্দ থামার পর ভোরের আলোতে টহল দলের সদস্যরা এলাকায় তল্লাশী করে মো. বেল্লাল হোসেন (২৫) গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। এছাড়াও ঘটনাস্থল থেকে ৯ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এ ব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

বিডি-প্রতিদিন/২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর