২৫ মার্চ, ২০১৯ ১৬:৫৮

দুবৃর্ত্তের আগুনে পুড়লো বিধবা নারীর সহায়-সম্বল

ফরিদপুর প্রতিনিধি

দুবৃর্ত্তের আগুনে পুড়লো বিধবা নারীর সহায়-সম্বল

ফরিদপুরের সদর উপজেলার গেরদা ইউনিয়নের নিখুরদি গ্রামে রবিবার গভীর রাতে দুবৃর্ত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ে গেছে ময়ুরী বেগম (৪৮) নামের এক বিধবার সব সহায় সম্বল। আগুনে ঘরের মধ্যে ময়ুরী বেগম ও তার ননদ রহিমন নেছা আটকা পড়লেও স্থানীয়দের সহায়তা প্রানে বেঁচে যান তারা। আগুনে দুইটি ঘর ও একটি গোয়াল ঘর পুড়ে যায়। এতে ঘরের সমস্ত মালামাল পুড়ে গেছে। আগুনে পুড়ে একটি গরু, তিনটি ছাগল মারা যায়। সহায় সম্বল সবকিছু হারিয়ে একেবারেই নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন বিধবা ময়ুরী বেগম। 

স্থানীয়রা জানান, নিখুরদী গ্রামের মৃত জালাল সরদারের স্ত্রী ময়ুরী বেগম তার একমাত্র মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে বসবাস করতেন। তার ৪ ছেলের মধ্যে তিনজন ঢাকায় ও অন্যজন বিদেশে থাকেন। রবিবার রাতে হঠাৎ করেই আগুন দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা চিৎকার শুরু করলে ময়ুরী বেগম ও তার ননদ আগুনের কারণে ঘর হতে বের হতে পারছিলেন না। পরে স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি ঘরের মধ্যে ঢুকে তাদের বের করে আনলে তারা প্রাণে বেঁচে যান। ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় আগুন নেভানো হলেও তিনটি ঘর সম্পূর্ণভাবে ভস্মিভূত হয়ে যায়। এতে ঘরের সমস্ত মালামাল পুড়ে যায়। 

স্থানীয়রা জানান, প্রতিবেশী এক ব্যক্তির সাথে বিরোধ ছিল ময়ুরী বেগমের। সেই বিরোধের জের ধরেই আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে। ঘরের চারদিকে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেবার অভিযোগও করেন তারা।

ময়ুরী বেগম জানান, তার স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে তিনি মেয়েকে নিয়ে বসবাস করে আসছেন। প্রতিবেশী শহিদ তালুকদার এক বছর আগে দোকান করার কথা বলে তার কাছ থেকে ১৭ হাজার টাকা ধার নেয়। কিন্তু পরবর্তীতে সেই টাকা দিতে অস্বীকার করে। এ নিয়ে কয়েকবার বিচার সালিশও হয়েছে। বিগত দুই মাস আগে টাকা চাইতে গেলে শহিদ তাকে এবং তার মেয়ে জুলিয়াকে বেদমভাবে পিটিয়ে আহত করে। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলাও হয়। এর কয়েকদিন পর টিউবয়েলে বিষ ঢেলে রাখে কে বা কারা। টিউবয়েলের পানি খেতে অসুস্থ হয়ে পড়েন ময়ুরী বেগম। পরে চিকিৎসা নিয়ে তিনি সুস্থ হন। গত মাসে টাকার জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে ময়ুরী বেগম বিচার দিলে চেয়ারম্যান এ মাসের ১৮ তারিখ পর্যন্ত শহিদকে সময় দেন টাকা ফেরত দেবার জন্য। তিনদিন আগে সেই টাকা চাইতে গেলে বিভিন্ন হুমকি ধামকি ও গালাগাল করে শহিদ। ময়ুরী বেগম অভিযোগ করে বলেন, শহিদই আমাদের পুড়িয়ে মারার হুমকি দিয়েছিল। সেই এ কাজ করেছে। 

ময়ুরী বেগমের অভিযোগের বিষয়ে স্থানীয় চা দোকানী শহিদ তালুকদারের মন্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়। প্রতিবেশীরা জানান, তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

গেরদা ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুজ্জামান জাহিদ বলেন, পাওনা টাকা নিয়ে শালিস করে দিলেও শহিদ তার নির্দেশ মানেননি। 

কোতয়ালী থানার এসআই বাশার জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে সবকিছু দেখে এসেছি। এ বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিডি-প্রতিদিন/২৫ মার্চ, ২০১৯/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর