২৫ মার্চ, ২০১৯ ১৭:৩৯

নাটোরে অর্থ সংকটে সড়ক প্রশস্তকরণ কাজে স্থবিরতা

নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরে অর্থ সংকটে সড়ক প্রশস্তকরণ কাজে স্থবিরতা

আর্থিক সংকটে থেমে আছে নাটোরের ‘মেগা প্রজেক্ট’ হিসেবে খ্যাত নাটোর শহরের বনবেলঘড়িয়া বাইপাস থেকে হরিশপুর বাইপাস পর্যন্ত শহরের ৫.৮৬ কিলোমিটার সড়কটির প্রশস্তকরণ কাজ। প্রকল্পের মেয়াদে শেষ হতে আর তিন মাস বাকী থাকলেও এখন পর্যন্ত প্রশস্তকরণের কাজ হয়েছে ৬০ ভাগ। অর্থাৎ অর্ধেকের কিছু বেশি কাজ আর্থিক সংকটে থেমে গেছে জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়াটি। প্রকল্পের মেয়াদ অন্তত আরও এক বছর বাড়াতে মন্ত্রণালয়েকে চিঠি দিয়েছে স্থানীয় সড়ক বিভাগ।

জেলা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সূত্র বলছে, সুষমভাবে সম্প্রসারণ কাজের জন্য শহরের কানাইখালী পুরাতন বাসস্ট্যান্ড থেকে মুসলিম ইন্সটিটিউট পর্যন্ত সড়কের দুইপাশে জমি অধিগ্রহণ করা প্রয়েজন। সড়ক বিভাগ সম্প্রতি জমির পরিমাণ নির্ধারণের প্রাক্কলন করে প্রয়োজনীয় অর্থের বরাদ্দ চেয়েছে। সে অনুযায়ী, দশমিক ৪৪ একর জমির জন্য ৩৩ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে সংশোধিত প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের শেষভাগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাটোর সফরকালে শহরবাসীকে দেয়া সাতটি প্রতিশ্রুতির অন্যতম ছিল শহরের মধ্যে দিয়ে যাওয়া সড়কটির ডিভাইডারসহ প্রশস্তকরণ করা। সেই সূত্রে এডিবির অর্থায়নে নাটোর শহরের হরিশপুর বাইপাস মোড় থেকে বনবেলঘরিয়া বাইপাস মোড় পর্যন্ত নাটোর শহরের প্রধান সড়কের মিডিয়ানসহ পেভমেন্ট প্রশস্তকরণ প্রকল্পের আওতায় মোট ৫দশমিক ৮৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ডিভাইডার ও ড্রেন-ফুটপাথসহ ৪৮ ফুট প্রস্থের সম্প্রারিসত সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে। 

স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের তৎপরতায় দ্রুতগতিতে সমাপ্ত হয় প্রকল্পের প্রায় অর্ধেক কাজ। বর্তমানে জমি অধিগ্রহণজনিত কারণে প্রকল্পটি সংশোধনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হওয়ায় শহরের আলাইপুরস্থ মুসলিম ইন্সটিটিউট থেকে ছায়াবানীর মোড় হয়ে কানাইখালীস্থ নাটোর প্রেস ক্লাব পর্যন্ত সম্প্রসারণ কাজ থেমে রয়েছে দীর্ঘদিন। প্রশস্তকরণ কাজ অর্থাভাবে থেমে থাকায় পুরাতন বাসস্ট্যান্ড থেকে মুসলিম ইন্সটিটিউট পর্যন্ত সড়কের দুইপাশে ড্রেন কাম ফুটপাত নির্মাণের কাজও বন্ধ রয়েছে। তবে সমাপ্ত অংশের ড্রেন ও ফুটপাত কাজ শেষের পরপরই ভরাট ও দখল হয়ে গেছে। 

শহরের বিভিন্ন স্থানে ড্রেনের ভগ্নাংশে স্তুুপাকারে গৃহস্থালির বর্জ্যসহ আবর্জনা ফেলায় প্রতিটি প্রবেশমুখ বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া ফুটপাত দখলে নিয়ে পথচারীদের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে এক শ্রেণির দখলদার। ফুটপাতের উপর নির্মাণসামগ্রী রেখে ব্যবসাও করছেন অনেকে। ফলে ফুটপাতের ওপর দিয়ে পথচারীর চলাচলের পাশাপাশি সড়কে যান চলাচলেও বিঘ্নিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এতে করে ছোট খাটো দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে পথচারীদের। প্রশস্তকরণ কাজে বিরতির সুযোগে ধীরে ধীরে ভরাট ও দখল হচ্ছে ড্রেন ও ফুটপাত বলে মনে করছেন জনসাধারণ।

সরেজমিন দেখা যায়, হরিশপুর বাইপাস থেকে সড়ক প্রশস্তকরণ কাজ শুরুর পর মাদ্রাসা মোড় হয়ে ডিভাইডার নির্মাণ কাজ শহরের কানাইখালী এলাকায় এসে শেষ হয়েছে। 

সড়ক বিভাগ জানায়, সেখানে সড়কের উভয় পাশে সড়ক বিভাগ ও ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে বেশ কয়েকটি স্থাপনার জন্য জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। জমি অধিগ্রহণ সাপেক্ষে সড়কের প্রশস্তকরণ এবং ড্রেন নির্মাণ সম্ভব। একইভাবে কেন্দ্রীয় মসজিদ মার্কেটের পর থেকে সড়কের বাম পাশের বিভিন্ন দোকান, নিমতলা, উত্তরা সুপার মার্কেট, আলাইপুরস্থ বইপট্টি, মুসলিম ইন্সটিটিউট গেট এবং সড়কের উত্তর পাশের আলহাজ্ব রহমান প্লাজা, মনসুর রহমান সুপার মার্কেট, পিলখানা রোডে প্রবেশমুখের বিভিন্ন দোকান, বাটার গলি হয়ে আলাইপুর মসজিদ পর্যন্ত সড়কের দুই ধারে অধিগ্রহণ হলেই কেবল সমদূরত্বের প্রশস্তকরণ সম্ভব বলে জানান সড়ক বিভাগের প্রকৌশলী।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ হোসেন জানান, প্রশস্তকরণ কাজে গতি আনতে অধিগ্রহণ প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করে ৩৩ কোটি টাকা চেয়ে সংশোধিক প্রকল্প প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে। ড্রেন ও ফুটপাতের কাজ শেষ হলে ভরাট ও দখল নিয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা হবে।


বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর