২৫ মার্চ, ২০১৯ ১৮:০২

হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সই যেন রোগী!

নিজস্ব প্রতিবেদক

হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সই যেন রোগী!

সমস্যায় জর্জড়িত হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকসহ কাঙ্খিত জনবল নেই, নেই কোনো অ্যাম্বুলেন্স, আলট্রাসনোগ্রাম ও ইসিজি মেশিন, নেই ডেন্টাল সরঞ্জামাদি, নেই স্টোরকিপার ও ইলেকট্রিশিয়ান। রয়েছে পরিচ্ছন্ন কর্মীর অভাব। আবার অত্যাধুনিক ওটি (অপারেশন থিয়েটার) থাকা সত্ত্বেও সার্জারি ও এনেসথেসিয়া ডাক্তার না থাকায় কোনো অপারেশন হয় না। এমনটাই জানালেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচএ।

এদিকে, এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দালালরা রোগীদের বাইরের ক্লিনিক থেকে আলট্রাসনোগ্রাম ও ইসিজি করতে উৎসাহিত করছে। তাই দিনাজপুরের সীমান্তবর্তী দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম হিলি স্থলবন্দরে কাজ করা কয়েক হাজার শ্রমিকসহ হাকিমপুরের ২ লক্ষাধিক মানুষ প্রত্যাশিত চিকিৎসাসেবা থেকে হচ্ছে বঞ্চিত। 

এছাড়াও জরুরি রোগীদের যেতে হচ্ছে ৮০কিলোমিটার দূরে জেলা সদর দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল অথবা ১২০কিলোমিটার দূরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। আ্যম্বুলেন্স না থাকায় দ্বিগুণ ভাড়ায় মাইক্রোযোগে অন্যত্র যেতে হচ্ছে জরুরি রোগীদের। চরম দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা। 

কিন্তু এ হাসপাতালের অবকাঠামো বাড়লেও রোগীর বেডে লাগেনি আধুনিকতার ছোঁয়া। অবস্থা দেখে মনে হয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সই যেন রোগী। এরপরেও রোগীদের অভিযোগ চিকিৎসা পেলেও ওষুধ দেয়া হয় না। বাইরে থেকে কিনতে বলা হয়। যদিও এসব অস্বীকার করেন চিকিৎসকরা।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, সেবিকার ২০টি পদ থাকলেও কর্মরত আছেন ১৩ জন। এ ছাড়াও ভান্ডার রক্ষক, হিসাবরক্ষক, ফার্মাসিস্ট, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব), মেডিকেল ল্যাব (ফিজিও), নার্সিং সুপার ভাইজার, কার্ডিওগ্রাফার ও কম্পিউটারের একটি করে শূন্য পদ রয়েছে। চিকিৎসক না থাকায় জরুরি বিভাগ ও বহিঃর্বিভাগ-এ স্বাস্থ্য সহকারীরাই চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। 

বহিঃর্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার চেংগ্রামের গোলাম রাব্বি জানান, মাত্র একজন ডাক্তার বহিঃর্বিভাগে রোগী দেখছেন এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। বিভিন্ন রোগীর স্বজনরা জানান, আমরা প্রকৃত সেবা পাচ্ছি না, ডাক্তারের দর্শন পাওয়া যেন ভাগ্যের ব্যাপার। প্রতিদিন ইনডোর ও আউটডোর মিলে ৩শ থেকে ৪শ রোগী আসে। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচএ ডা. সাদেকুল ইসলাম জানান, ৫০ শয্যায় উন্নীত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩১ জন বিশেষজ্ঞসহ ডাক্তার প্রয়োজন হলেও বর্তমানে কর্মরত মাত্র ৫ জন। ফার্মাসিস্ট’র ২টি পদই ফাঁকা। সমস্যার পরেও কোনো রকমে রোগীদের সেবা দেওয়ার চেষ্ঠা করছি। কখনও প্রায় ২৪ ঘণ্টাই দায়িত্ব পালন করতে হয়। জনবল সংকটের বিষয়টি নিয়মিত স্বাস্থ্য বিভাগকে অবগত করা হচ্ছে। 

উল্লেখ্য, ১৯৮৬ সালে ৩ ফেব্রুয়ারিতে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরবর্তীতে সেবার পরিসর বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ২০১৩ সালে ২২ অক্টোবর ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। 


বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর