দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ কৃত্রিম জলধারা ও বাংলাদেশের প্রধান মৎস্য উৎপাদন কেন্দ্র রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে মাছধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ থাকবে আরও ১৫দিন। সম্প্রতি রাঙামাটি জেলা প্রশাসন ও রাঙামাটি মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের যৌথ বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। কাপ্তাই হ্রদে পর্যাপ্ত পানি বৃদ্ধি না পাওয়া পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে বলে জানানো হয়।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) সূত্রে জানা যায়, রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদ দেশের কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজননের একটি অন্যতম স্থান। এ হ্রদে প্রতি বছর প্রাকৃতিক প্রজনন কৃত মাছের মধ্যে শতকরা ৩১ ভাগ কাতলা, ১২ ভাগ রুই, শতকরা ৭ ভাগ মৃগেল ও ৫১ ভাগ কালিবাউশের প্রজনন হয়। যা দেশের সামগ্রিক মৎস্য সম্পদের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। তাই মাছের সুষ্ঠু প্রজননের লক্ষ্যে প্রতিবছর তিন মাস হ্রদের মাছ শিকারের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। একই সাথে বন্ধকালিন সময় কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। আবার এসব মাছের প্রজনন বৃদ্ধি সুরক্ষায় ভ্রাম্যমাণ আদালতও পরিচালনার করা হয়।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মো. মোশারফ হোসেন খাঁন জানান, রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে মাছের সুষ্ঠু ও প্রাকৃতিক প্রজনন, বংশ বৃদ্ধি এবং উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাছধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় গত ২৫ এপ্রিল। এরই মধ্যে তিন মাস পূর্ণ হয়েছে। তবে কাপ্তাই হ্রদে পানির পরিমাণ এখনো কম। এ পানিতে মাছ শিকার করলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে প্রজননের। কাপ্তাই হ্রদ এলাকায় সকল প্রকার মৎস্য আহরণ, সংরক্ষণ বাজারজাতকরণ, শুকানো ও পরিবহন সম্পন্ন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কেউ যদি এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তার বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এছাড়া মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধকালীন সময়ের মধ্যে সকল বরফকল বন্ধ থাকবে। নির্ধারিত অভায়শ্রম রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের বাংলো ঘাট, রাজবন বিহার ঘাট, লংগদু উপজেলা ইউএনও অফিস ঘাট এবং নানিয়ারচর ছয় কুড়ি বিল সব সময়ের জন্য মৎস আহরণ পূর্বের মতোই বন্ধ থাকবে।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের রাঙামাটি জেলা ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. আশরাফুল আলম ভূঁইয়া জানান, এরই মধ্যে কাপ্তাই হ্রদে পোনা ও মা মাছের সুরক্ষায় এ নিষেধাজ্ঞা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একই সাথে বন্ধকালিন সময় মাছের সুরক্ষায় নিয়জিত থাকবে কোস্ট গার্ড পুলিশ ও মৎস্য কর্মকর্তারা।
বিডি-প্রতিদিন/শআ