কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর উত্তাল। আবহাওয়া অনুকূলে নেই জেলেদের। বেশির ভাগ সমুদ্রগামী ট্রলার মাছ শিকারে যেতে পারেনি। এসব ট্রলারগুলো পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মৎস্য বন্দর মহিপুর, আলিপুর আড়ৎ ঘাটে নোঙ্গর করা রয়েছে।
তবে দীর্ঘ ৬৫ দিন নিষেধাজ্ঞার পর হাতেগোনা ট্রলার গভীর সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে অনেকেই ফিরছেন খালি হাতে। আবার অনেকে ফিরছেন খুব কম সংখ্যক ইলিশ নিয়ে। এর ফলে মার্কেটগুলোতে ইলিশের দামও অনেকটা চড়া।
ব্যবসায়ীরা জানান, ১ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৮ শ’ থেকে ২ হাজার টাকা কেজি দরে, ৮শ’ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১২ শ’ থেকে ১৪ শ’ টাকা কেজি দরে, ৫ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮শ’ থেকে ১ হাজার টাকা কেজি দরে এবং জাটকা বিক্রি হচ্ছে ৪ শ’ থেকে ৫ শ’ টাকা কেজি দরে।
এদিকে কারফিউ বলবত থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন পাইকারী মৎস্য ব্যবসায়ীরা। ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাছ সরবারহে দেখা দিয়েছে পরিবহন সংকট। বাধ্য হয়ে দ্বিগুন ভাড়ায় সরবারহ করতে হচ্ছে ইলিশ সহ সব ধরনের মাছ এমনটাই জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িরা।
আবহাওয়া সূত্রে জানা গেছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। সেই সঙ্গে বায়ুচাপ তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। এর প্রভাবে কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর বেশ উত্তল রয়েছে। এছাড়া উপক‚লীয় এলাকায় থেমে থেমে গুড়ি গুড়ি কিংবা মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। একই সাথে বিভিন্ন নদ নদীর পানি স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কোনো সময় উপক‚লীয় এলাকায় জড়ো হওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই পায়রা সহ সব সমুদ্র বন্দর সমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। একই সাথে সকল মাছধরা ট্রলার সমূহুকে উপক‚লের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
স্থানীয় জেলেরা জানান, বর্তমানে কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সকালে গভীর সমুদ্রে আকস্মিক ঝড়ের কবলে পড়ে ৫টি নাম বিহীন মাছ ধরার ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ইমন নামে এক জেলের এখনও খোঁজ মেলেনি। তার বাড়ী মৌডুবী ইউনিয়নে কেওরালা গ্রামে বলে জানা গেছে।
মৎস্য বন্দর আলীপুরের ট্রলার মালিক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো.জলিল মিয়া জানান, মঙ্গল-বুধবার সকালে এসব ট্রলার মাছ ধরার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। গভীর সমুদ্রে জাল ফেলার সময় আকস্মিক ঝড় এবং উওাল ঢেউয়ের তোরে ট্রলারগুলো ডুবে যায় বলে উদ্ধার হওয়া জেলেরা তাকে জানিয়েছেন। উদ্ধার হওয়া জেলেদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে ।
মহীপুর মৎস্য বন্দর ট্রলার মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি হাজী মো.ফজলু গাজী জানান, ৬৫ দিনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞ শেষ হলেও সাগর উত্তাল থাকায় বেশির ভাগ জেলেরা ট্রলার নিয়ে মাছ শিকারে যেতে পারছে না। এখন তারা অপেক্ষা করছেন অনুকুল আবহাওয়ার।
বিডি প্রতিদিন/এএম