অস্বাভাবিক বৃষ্টি ও উজানের পানির বন্যায় বিপর্যস্ত এখন লক্ষ্মীপুরের মানুষ। প্লাবিত হয়েছে শতাধিক গ্রাম। এতে করে জেলার ৫টি উপজেলার সাড়ে ৬ লাখেরও বেশি মানুষ এখন পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। মেঘনা, ডাকাতিয়া ও রহমতখালি নদীর পানি এখন বিপৎসীমার উপর দিয়ে বয়ে চলছে। শুক্রবার সকাল থেকে পানি বেড়েছে আরো ২-৩ ফুট। হু হু করে পানি বেড়ে ডুবে গেছে নিম্নাঞ্চলের মানুষের বসতঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, ভেসে গেছে পুকুর ও জলাশয়ের মাছ। আক্রান্ত হয়েছে কৃষকদের ফসল। গ্রাম কিংবা শহর চারিদিকে থৈ থৈ করছে পানি। প্লাবিত এলাকাগুলোতে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। সবচাইতে বেশি ক্ষতি হচ্ছে কমলনগর, রামগতি, সদর ও রায়পুরে। এসব এলাকায় স্থানীয় প্রশাসন, বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে জানতে চাইলে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ইউনুছ মিয়া বলেন, ১৮৫টি আশ্রয় কেন্দ্র ও ৬৪টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের শুকনো খাবার বিতরণের নির্শেনা দেয়া হযেছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে আশ্রিত রয়েছে ৮ হাজার ৫০০ জন মানুষ।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে জেলায় প্রায় ২৫ হাজার পুকুর-জলাশয় ভেসে গেছে, ১৫ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মো. মঞ্জুর হোসেন জানান, বন্যায় আমন ধানের বীজ তলা প্রায় ২ হাজার হেক্টর, রোপা আমন ধান, আউশ ধান ও শরৎকালীন সবজি আক্রান্ত হয়েছে। কৃষকদের জন্য বীজ সংগ্রহ করে রাখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ জামান খান বলেন, বিভিন্ন বাঁধ খুলে দেয়া হয়েছে। বৃষ্টি নাহলে পরিস্থিতি উন্নতির দিকে ডাবে বলে জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান বলেন, পানিবন্দী মানুষদের শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/এএ