বন্যার ভয়াবহতায় মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছে লক্ষ্মীপুরে প্রায় ৯ লাখ মানুষ। নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছে বন্যার্তরা। ঘরে কোমড় পানিতে বসবাস অনুপযোগী হয়ে উঠেছে, রাস্তায় হাটু পানিতে যাতায়াতেও অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে এসব মানুষদের। সন্তান-সন্তুতি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বন্যার্ত বহু পরিবার। এসব পরিবারে রয়েছে খাদ্য সঙ্কট ও সুপেয় পানির অভাব। বন্যাদুর্গত এলাকার বহুস্থানে ত্রাণও বিতরণ হয়নি এখনো। মানবেতর জীবন যাপন করছেন অনেকে। নতুন করে বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আশ্রয়কেন্দ্র গুলোতেও ঠায় নেই।
সোমবার সকাল থেকে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের, ডিবি রোড, আইডিয়াল কলেজ এলাকা, লাহারকান্দি, বাঙ্গাখা, বশিকপুর ও দত্তপাড়া, দিঘলী, টুমচরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, পানিবন্দী হয়ে পড়েছে এসব এলাকার বাসিন্দারা। পানি বেড়েই চলেছে এসব এলাকায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে একই অবস্থা সদরের ২১ টি ইউনিয়নের ১৯টি ইউনিয়নে। বর্তমানে লাখো মানুষ পানিবন্দী এসব এলাকায়। এছাড়াও রামগতি, কমলনগর, রায়পুর ও রামগঞ্জেও একই পরিস্থিতি।
এসব এলাকার পানিবন্দি লোকজন ছুটে চলছে আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে। কোনো কোনো আশ্রয়কেন্দ্র পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। নতুন নতুন করে লোকজনের ঘরেও পানি ওঠতে শুরু হয়েছে। তারাও আশ্রয়কেন্দ্রে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া এবং পানিবন্দি মানুষদের জেলা প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে ত্রাণ সামগ্রী দিতে দেখা গেছে। তবে এটি চাহিদার তুলনায় খুবই কম বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
দিনভর জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রদল, যুবদল, কৃষকদল, জেলা পুলিশ ত্রাণ বিতরণ করেন। এসময় জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. রেজাউল করিম, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা সাবেক সংসদ সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না, জেলা যুবদলের সভাপতি রেজাউল করিম লিটন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম হুমায়ুন, সৈয়দ রশিদুল হাসান লিংকন, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসির, কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, স্থানীয় জেলা কৃষকদলের সভাপতি মাহবুব আলম মামুন, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল, জেলা ছাত্রদলের হাসান মাহমুদ ইব্রাহিম, সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদ, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ভিবিডি, রেডক্রিসেন্ট এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি সোশ্যাল সার্ভিসেস ক্লাব ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন। এছাড়া বন্যার্তদের মাঝে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ করেছে জেলা কৃষকদল।
জেলা ত্রাণ ও ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার শতভাগ এলাকা এখন পানির নিচে প্লাবিত হয়ে আছে। প্রায় ৯ লাখ মানুষ পানিবন্দি। দূরবর্তী বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ পৌছানো সম্ভব হচ্ছে না। আবার অনেকে পেয়েও না পাওয়ার কথা বলছেন বলে জানান এ কর্মকর্তা।
বিডি প্রতিদিন/এএম