অনিয়ম, দুর্নীতির কারণে রূপগঞ্জের পাশে রাজধানীর ডেমরার হাজী মোয়াজ্জেম আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদত্যাগের দাবিতে ফের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ সময় মানবন্ধন শেষে বিক্ষুব্ধরা ডেমরা-যাত্রাবাড়ী সড়ক অবরোধ করে রাখেন। মঙ্গলবার দুপুরে ওই বিদ্যালয় সংলগ্ন রাস্তায় ও স্টাফ কোয়ার্টার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সপ্তম ধফায় তারা এসব কর্মসূচি পালন করেন। এদিকে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে গত ১৩ দিন ধরে বিদ্যালয়ে আসছে না বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. আফতাব উদ্দিন চৌধুরী। এতে স্কুলটিতে শিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। আর প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে প্রতিদিনই ওই বিদ্যালয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অব্যাহত রেখেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এরই মধ্যে শিক্ষকরা কর্মবিরতি কর্মসূচিও পালন করেছেন। প্রতি কর্মসূচিতেই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাসহ অভিভাবকগণ অংশ নিচ্ছেন।
বিক্ষোভকারীরা জানায়, ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম, চাকুরি দেওয়ার নামে টাকা ১০-১২ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ, ভবনের কাজের বরাদ্দকৃত ১২ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ, অতিরিক্ত টাকা আদায়, স্বেচ্ছাচারিতা, রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোসহ নানা অনিয়ম- দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে। এ সময় ছাত্র-ছাত্রীরা ‘দফা এক দাবি এক, আফতাবের পদত্যাগসহ নানা স্লোগানে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবি জানায়।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানায়, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অত্র প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শিক্ষকসহ সিন্ডিকেট করে নানা অনিয়ম দুর্নীতি শুরু করেন আফতাব উদ্দিন। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায়, বিনা রশিদে অর্থ আদায়, ভুয়া বিল করে টাকা আত্মসাত, কোচিং বাণিজ্য, উপবৃত্তির শিক্ষার্থী নির্বাচনে অনিয়মসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতি করেন তিনি। এছাড়াও প্রধান শিক্ষক কখনো শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করতেন না। এমনকি কেউ তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে তাকে শাস্তিমূলক টিসি প্রদান করতেন। অভিভাবকদের সাথেও দুর্ব্যবহার করতেন ওই প্রধান শিক্ষক।
সড়ক অবরোধের বিষয়ে ডেমরা থানার পরিদর্শক অপারেশন সুব্রত কুমার পোদ্দার বলেন, মোয়াজ্জেম আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে সমন্বয় করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে থানার পক্ষ থেকে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি শাহাদাৎ মাওলানা বলেন, বিষয়টি নিয়ে গত ১৩ দিন ধরে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছন বিক্ষুব্ধরা। প্রধান শিক্ষকের অর্থ আত্মসাৎ নিয়ে তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর কোনো অনিয়ম হয়নি। প্রধান শিক্ষককে আমি বা আসতে বলেছি কিন্তু তিনি আসতে অপারগ। আমি ঘটনায় বিভিন্ন মহল ইন্ধন দিচ্ছে।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক মো. আফতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়টি একেবারেই মিথ্যা। ব্যক্তি আক্রোশে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। বর্তমানে আমি অসুস্থ বলে স্কুলে আসতে পারছি না। বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা নাজমা মেডামকে প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসার জন্য একটি মহল ইন্ধন দিচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের সভাপতির তত্ত্বাবধানে সব কিছু করেছি তাই এখানে অনিয়মের সুযোগ নেই। আর বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করলে সব সত্য বেরিয়ে আসবে।
বিডি প্রতিদিন/এএ