নওগাঁয় গৃহবধূকে ফজিলাতুন নেছাকে (২৫) পুড়িয়ে হত্যার প্রতিবাদে এবং এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। দুপুরে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে ছাত্র সমাজ ও এলাকাবাসী ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
ফজিলাতুন নেছা নওগাঁ সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) এর সদস্য ছিলেন। তিনি সদর উপজেলার ভবানীপুর মধ্যেপাড়া গ্রামের গোলাম রাব্বানীর স্ত্রী। ফজিলাতুন নেছা গত ২৭ আগস্ট নওগাঁ পৌরসভার ভবানীপুর মধ্যপাড়া এলাকায় স্বামীর বাড়িতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে গুরুত্বর আহত হন। এ ঘটনার ৮ দিন পর গত ৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর বাবা ফজলুর হোসেন বাদী হয়ে স্বামী গোলাম রাব্বানীসহ চারজনের বিরুদ্ধে নওগাঁ সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। মানববন্ধনে বিভিন্ন ¯েøাগান সম্বলিত প্লে-কার্ড হাতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, এলাকাবাসী ও নিহতের স্বজনরা মানববন্ধনে অংশ নেয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, যৌতুকের টাকার জন্য ফজিলাতুন নেছাকে তাঁর স্বামী ও শ^শুরবাড়ির লোকজন প্রায় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতন। গত ২৭ আগস্ট সকালে যৌতুকের টাকার জন্য মারধর করে ফজিলাতুন নেছার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় স্বামী গোলাম রাব্বানী। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮দিন ধরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়। নৃশংস এ ঘটনার সঙ্গে স্বামীসহ অন্য যারা জড়িত আছেন সবাইকে আইনের আওতায় এনে দ্রæত বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
স্বর্না খাতুন নামে নওগাঁ সরকারি কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, যৌতুকের জন্য স্বামী তাঁর স্ত্রীকে পিটিয়ে এবং আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারবে এটি জঘন্য অপরাধ। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাঁদের কঠিন শাস্তির দাবী জানাচ্ছি। আরেক শিক্ষার্থী জীবননেছা প্রীতি বলেন, আমাদের বোনের হত্যাকারীদের দ্রæত গ্রেপ্তার করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। যাতে করে আর কোনো বোনকে আমরা এভাবে না হারাই। এতদিন আগে মামলা হলেও পুলিশ মাত্র একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এটি খুবই দুঃজনক।
নিহত ফজিলাতুন নেছা বাবা ফজলুর রহমান বলেন, যৌতুকের জন্য প্রায় আমার মেয়েকে মারধর করতো গোলাম রাব্বানী। তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনও বিভিন্ন সময় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে। তাঁরা শেষ পর্যন্ত আমার মেয়েকে পুড়িয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করলো। খুব কষ্টকে মেয়েটাকে মানুষ করেছি। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হওয়ার পর প্রধান অভিযুক্ত গোলাম রাব্বানীকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের পলাতক রয়েছেন। তাদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম