২০০৯ সালে বিডিআর হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও চাকুরিচ্যুত সকল বিডিআর সদস্যদের চাকুরিতে পুর্নবহালের দাবিতে নারায়ণগঞ্জে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিডিআর কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গনে এই মাববন্ধনের আয়োজন করা হয়। একই সাথে মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন চাকুরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা। এসময় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক তাদের স্মারকলিপি যথাস্থানে উপস্থাপন করবেন বলে আশ্বস্ত করেন।
মানববন্ধনে চাকুরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা বলেন, বাংলাদেশ রাইফেলসকে ধ্বংস করার জন্য এবং ক্ষমতা সুদৃঢ় করতে নীল নকশার অংশ হিসেবে সুপরিকল্পিতভাবে পিলখানা হত্যাকাণ্ড সংগঠিত করে। ওই হত্যাকাণ্ডে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন শাহাদাতবরণ করেন। ঘটনা পরবর্তী ফ্যাসিস্ট সরকার প্রহসনের বিচারের নামে আদালত ধ্বংস ও নিরীহ ৫৪ জন বিডিআর সদস্যকে নিরাপত্তা হেফাজতে হত্যা করে।
তারা আরও বলেন, পিলখানা হত্যার ঘটনাকে তথাকথিত বিদ্রোহ সংজ্ঞায়িত করে ১৮ হাজার ৫২০ জন বিডিআরকে চাকুরিচ্যুতসহ বিভিন্ন মেয়াদে শান্তি প্রদান করেন। বর্তমানে হাজার হাজার বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে।
সেই সাথে স্মারকলিপিতে তারা ৯ দফা দাবি উপস্থাপন করেন। দাবীগুলোর মধ্যে রয়েছে- ২০০৯ সালে ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি বিডিআর পিলখানায় সুপরিকল্পিত হত্যাকান্ডকে তথা কথিত বিদ্রোহ সংজ্ঞায়িত না করে পরিকল্পিত হত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করতে হবে, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে গঠিত সকল প্রহসনের বিশেষ আদালতকে নির্বাহী আদেশে বাতিল করতে হবে, চাকুরিচ্যুত সকল পদবির বিডিআর সদস্যকে সুযোগ সুবিধাসহ চাকুরিতে পুর্নবহাল করতে হবে, হত্যা মামলার হাইকোর্টের রায়ের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী পিলখানার হত্যার ঘটনার মোটিভ উদ্ধার ও কুশিলবদের সনাক্তকল্পে স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে, পিলখানা হত্যায় শাহাদাৎ বরণকারী ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে শহীদের মর্যাদা দিতে হবে, ২৫ ফ্রেব্রুয়ারি দিনটিকে পিলখানার ট্রাজেডি দিবস হিসেবে ঘোষণা করতে হবে, পিলখানা হত্যার ঘটনা পরবর্তী তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদে নিরাপত্তা হেফাজতে যে সকল নিরীহ বিডিআর সদস্যদের নির্যাতনপূর্বক হত্যা করা হয়েছে তাদের তালিকা প্রকাশপূর্বক মৃত সকল পদবির পরিবারকে ক্ষতিপূরণসহ পুনর্বাসন করতে হবে, তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদে নিযুক্ত হত্যায় জড়িত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সনাক্তপূর্বক বিচারের আওয়ার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে, দীর্ঘ বিশেষ আদালত কর্তৃক বিভিন্ন মেয়াদে সাজাভোগ শেষকারী বিডিআর সদস্যগণ যারা বিস্ফোরক মামলায় দীর্ঘ ১৬ বছর কারাগারে আছেন তাদের আগামী ৩০ দিনের মধ্যে জামিন অথবা মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিডিআর কল্যাণ পরিষদের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও সাবেক বিডিআর সদস্য মো. শহিদুল ইসলাম, বিডিআর সদস্য কাজী সৌরভ, মো. আল-আমিন মিয়া, রনি আহমেদ, মো. গোলাম কিবরিয়া ও আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
বিডি প্রতিদিন/এএ