নেত্রকোনা জেলার একমাত্র হিমাগার জেলা সদর হাসপাতালে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ আনা হলেও গত ৫ আগস্ট থেকে নষ্ট থাকায় লাশ নিয়ে বিপাকে পড়েন অনেকে। পরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সাময়িক ঠিক করা হলেও বারবার দেখা দিচ্ছে সমস্যা। এ নিয়ে আন্দোলন করা সামজিক সংগঠন স্বাস্থ্য অধিকার যুব ফোরামের দাবি জেলার একমাত্র হিমাগারটির স্থায়ী সমাধান জরুরী।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ১০ উপজেলা নিয়ে নেত্রকোনা জেলা। সেই সুবাদে জেলা সদর হাসপাতালেই রয়েছে শুধুমাত্র ময়নাতদন্তের জন্য হিমাগার। সেটিতে মোট ছয়টি লাশ রাখা যায়। যদিও দীর্ঘদিন ধরে বারবার ঠিকঠাক করে কোন রকমে চলে আসছে কার্যক্রম। কিন্তু গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকার পতনের সাথে সাথে ওই একমাত্র হিমাগারটিও নষ্ট হয়ে পড়ে। লাশ রাখলেও তা ফুলে যায়। এভাবেই নানা সমস্যায় অনেক ময়নাতদন্তের লাশ নিয়ে বিপাকে পড়েন স্বজনসহ ডোম।
হাসপাতাল মর্গ রেকর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত জানুয়ারী থেকে সেপ্টেম্বর ১৪ তারিখ পর্যন্ত ময়নাতদন্তের জন্য ১৫৭ টি লাশ এসেছে। এর আগে ২০২৩ সালে ছিলো ২৪১ টি।
উপস্থিত রিফাত অলি মিতুসহ বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা জানায়, গত ৭ সেপ্টেম্বর মোহনগঞ্জ থেকে এক নারীর লাশ নিয়ে আসলে বাধে বিপত্তি। ওই নারীর বাবার বাড়ি ফেনী জেলায় হওয়ায় স্বজনরা আসা যাওয়াসহ সময়টিতে হিমাগারে রাখতে গিয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের আগমনে দেখেন হিমাগারের ফ্রিজ সিস্টেম নষ্ট। এরপর বাইরে থেকে মাছের বরফ কিনে এনে ডোমের সহায়তায় লাশ কাটা ঘরে (মর্গে) রাখা হয় কোন রকমে। রাত জেগে দেয়া হয় পাহাড়া। পরে শিক্ষার্থীরা হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের চাপ দিলে দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধানের আশ্বাস দেন। পরবর্তীতে সাময়িকভাবে ঠিকও করেন। যদিও সেটি আবারও নষ্ট হয়ে পড়ে।
ডোম দিপু সরকার জানায়, ৫ আগস্ট নষ্ট হয়েছিলো। পরে ঠিক করা হলেও গত ১৭ আগস্ট থেকে আবারো একই অবস্থায় কয়েক দফায় কয়েকটি লাশ নিয়ে বিপদে পড়েন। বাইরে থেকে বরফ কিনে এনে মর্গে পাহাড়ায় রাখেন।
হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিতাই চন্দ্র দাস দেখান নানা অযুহাত। চিঠিপত্র দেয়ার কথাও জানান। ঠিক করে দিয়ে যায় জানান। কিন্তু আবার নষ্ট হওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যান।
এদিকে হাসপাাতালের তত্বাবধায়ক ডাক্তার আবু সাঈদ মো. মাহবুবুর রহমান জানান, সরকারি কোন কিছু ঠিক করা বা নতুন কিছু করার জন্য নানা নিয়ম কানুন মানতে হয়। বিজ্ঞাপন দিয়ে ঠিকাদারের মাধ্যমে ঠিক করাতে হয়। তারপরেও দ্রুত সমস্যা সমাধানে বেসরকারিভাবে ঠিক করা অব্যাহত রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল