বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ, প্রায় ৩.৫ কোটি মানুষ সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাস করেন। ইউএসএআইডির ইকোফিশ-২ প্রকল্পটি সমুদ্র সৈকতে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং জীবন ও জীবিকার সহায়তার জন্য কাজ করছে।
কক্সবাজার সদর, উখিয়া, টেকনাফ, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, কলাপাড়া এবং চরফ্যাশন উপজেলাসহ দেশের মোট দশটি স্থানে ১৪০ জন ব্লু-গার্ডকে (স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক) সংযুক্ত করা হয়েছে। এই সকল স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকগণ মাসে দুইবার সমুদ্র তীর থেকে প্লাস্টিক, ছেঁড়া জালসহ সমুদ্রের জন্য ক্ষতিকারক বর্জ্য ও আবর্জনা সংগ্রহের পাশাপাশি সমুদ্র থেকে মাছ আহরণ শেষে ফিরতি নৌকা থেকেও আবর্জনা সংগ্রহ করেন।
বর্তমানে ২০২৪ সালের সমুদ্র উপকূল পরিচ্ছন্নতা দিবস উপলক্ষে একটি বর্ণাঢ্য র্যালির আয়োজনে উদযাপন শুরু হয় এবং এতে ব্লু গার্ড, সিটিজেন সায়েন্টিস্ট, ল্যান্ডিং সেন্টারভিত্তিক মৎস্য সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য, মৎস্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, স্থানীয় স্টেকহোল্ডার, ইকোফিশ-২ টিমের সদস্যসহ স্থানীয় জনগণ অংশগ্রহণ করেন। র্যালির পরে তারা সৈকত পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশগ্রহণ করেন।
উক্ত আলোচনা অনুষ্ঠানে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং টেকসই মৎস্য সম্পদের ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। সামুদ্রিক দূষণের ঝুঁকি, বিশেষ করে প্লাস্টিক বর্জ্যের ক্ষতিকারক দিকগুলোও আলোচনায় উঠে আসে। ইকোফিশ-২ প্রকল্প সামুদ্রিক পরিবেশে বর্জ্যের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করে এবং উপকূলীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী চিন্তা-চেতনার পরিবর্তনে উৎসাহিত করে।
মৎস্য অফিস টেকনাফের ফিন্ড অফিসার শহিদুল আলম বলেন, সাগরে জীববৈচিত্র রক্ষায় জেলেদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। সামুদ্রিক দূষন রোধ করতে না পারলে ভবিষ্যতে আমাদের সাগর থেকে মাছ হারিয়ে যাবে।
এলএফসিসির সভাপতি জাহিদ হোসেন বলেন, আমাদের সাগর আমাদের নিজেদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। আমরা যদি আমাদের সমুদ্র-সৈকত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে পারি তাহলে টুরিস্ট স্পট হিসেবে আমাদের ঘাটের সুনাম বাড়বে। ব্লুগার্ড জাহাঙ্গীর ভবিষ্যতে প্লাস্টিক দূষণ রোধে জেলেদের নিয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করবেন বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।
ইকোফিশ -২ প্রকল্পের গবেষণা সহযোগী নাসরুল্লাহ আল মামুন প্রোগামের উদ্দেশ্য ও তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, যেভাবে প্লাস্টিক দূষণ বাড়ছে আমরা সচেতন না হলে আগামী ২০৫০ সাল নাগাদ সাগরে মাছের পরিবর্তে শুধু প্লাস্টিক ভেসে বেড়াবে। উপস্থিত সকলকে আজ থেকেই সাগর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য অনুরোধ করেন। ইকোফিশ-২ প্রকল্পের গবেষণা সহকারী সোহেল রানা অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এবং বলেন সামুদ্রিক দূষণ বাড়তে থাকলে ভবিষ্যতে সামুদ্রিক পরিবেশে, ইকোনমি ও জীবনমানের ওপর প্রভাব পড়বে।
বিডি প্রতিদিন/এএ