পটুয়াখালীতে “নিরাপদ পরিবেশে আসন্ন শারদীয়া দুর্গাপূজা উদযাপনে সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতৃবৃন্দের সাথে গোলটেবিল বৈঠক হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় শহরের পাশা ট্রেনিং সেন্টারে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বছর পটুয়াখালী জেলায় মোট ১৭৬টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সনাতন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিগণ, পূজা উদযাপন পরিষদেও নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পূজা মন্দিরের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিকবৃন্দ, জেলা প্রশাসন প্রতিনিধি, পুলিশ প্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, যুব নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণ, এমএএফ সদস্যরা, ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল-এর কর্মকর্তাসহ আরো অনেকে।
এই সভার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করে দূর্গাপূজার সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিতে কাজ করার প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করে এমএএফ। একই সাথে দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে সার্বিক সহায়তা প্রদান ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা প্রদান করতে চায় এমএএফ।
সভায় বক্তারা সকলেই নিরাপদে শারদীয় দূর্গাৎসব উদযাপনের জন্য সকলের সহযোগিতার আহ্বান জনান ও যার যার জায়গা থেকে সহযোগিতার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। জেলা বিএনপি নেতা ও এমএএফ পটুয়াখালীর সাধারন সম্পাদক এড. মো. মুজিবুর রহমান টোটনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে এমএএফ-এর পক্ষ থেকে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পটুয়াখালী পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা এমএএফ সদস্য মোশতাক আহমেদ পিনু। তিনি বলেন, “আগে আমরা মিটিং করতাম কি করে পূজা আরো উৎসবমুখর পরিবেশে করা যায়। আর এখন মিটিং করি পূজার নিরাপত্তা নিয়ে। এর কারণ আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।”
ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল-এর ডেপুটি ডিরেক্টর দিপু হাফিজুর রহমান তার শুভেচ্ছা বক্তব্যের পর পটুয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা মেজিস্ট্রেট মোহাম্মদ তারেক হাওলাদার সাহিত্যের নানা উদাহরণ এনে বলেন, সনাতন ধর্মও আমাদের দেশের ঐতিহ্য। তিনি পারস্পরিক সম্মানের প্রতি জোড় দেন। তিনি বলেন, “সর্বোচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা মন্দিরগুলোতে থাকবে। ঝুঁকিপূর্ণতা বিবেচনায় মন্দিরের ক্যাটাগরী করে নিরাপত্তা প্রদান করা হচ্ছে। ৮ তারিখ থেকে এই নিরাপত্তা দ্বিগুণ করা হবে। ৮৪ টি মোবাইল টিম কাজ করবে। পরিবর্তিত পরিস্থিতি, তাই এত নিরাপত্তা। এর মানে এই নয় যে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা আমাদের থেকে পৃথক।” মোহাম্মদ তারেক হাওলাদার তার ব্যক্তিগত নম্বর প্রদান করেন উপস্থিত সকলের জন্য পূজা উৎসবে নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি স্বপন ব্যানার্জি বলেন, “আমরা উৎসব করবো, কিন্তু উচ্ছৃঙ্খলতা নয়। আমরা চাই, আমাদের এবারের আয়োজনের মাধ্যমে আমরা যেন শত শত বছরের ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারি। শুধু আমরাই না, আমাদের সাথে থাকবে মুসলমান, বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ভাইয়েরা।”
জেলা পুলিশ উপ-পরিদর্শক গোয়েন্দা সৈয়দ বাবুল আকতার পটুয়াখালী পুলিশ-এর উদ্যোগসমূহ তুলে ধরে আসন্ন দূর্গাপূজা উদযাপনে নিরাপত্তা নিশ্চিতে একটি হটলাইন নম্বর দেন।
নিরাপদ পরিবেশে আসন্ন দূর্গাপূজা উদযাপনের জন্য ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল-এর সহায়তায় এবং ইউকে-এর এফসিডিও-এর অর্থায়নে মাল্টিপার্টি অ্যাডভোকেসি ফোরাম (এমএএফ) সনাতন ধর্মালম্বী নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম