শত শত বিঘা জমি ও স্থাপনা দিন দিন হয়ে যাচ্ছে বেদখল। বছরের পর বছর দেখভাল ও তদারকি না করায় চলছে লুটপাট। যেন অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে ঝিনাইদহের গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের এসব জায়গা। প্রকল্পের দশা এমন বেহাল হলেও কোন মাথা ব্যাথা নেই কর্তৃপক্ষে। দোহায় দিচ্ছেন লোকবল সংকটের।
ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, ঝিনাইদহের শৈলকুপা, হরিণাকুন্ডু ও সদর উপজেলায় জিকে সেচ প্রকল্পে প্রায় ৩শ থেকে সাড়ে ৩শ বিঘা জমি বেদখল ও পরিত্যক্ত হয়ে আছে। এসব স্থানগুলোতে দখলে রয়েছে ৫শ থেকে সাড়ে ৫শ।
শৈলকুপা উপজেলার গাড়াগঞ্জ এলাকায় পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে অবস্থিত পানি উন্নয়ন বোর্ডের শাখা অফিসের স্থাপনাগুলো বন জঙ্গলে ছেয়ে গেছে। খুলে যাচ্ছে ওইসব ভবনের ইট। সেই সাথে ধ্বসে পড়ছে দেয়াল। কোথাও আবার চুরি হচ্ছে জানালা দরজাসহ সেচ খালের লোহার গেট। এরই মাঝে দখলে মেতে উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। গড়ে তুলেছে দোকানপাট, ঘরবাড়ি ও বিভিন্ন স্থাপনা।
গাড়াগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা আজাদ হোসেন বলেন, জিকে সেচ প্রকল্পের শত শত বিঘা জমি ও স্থাপনা বছরের পর বছর বিলিন হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ নজর না দেওয়া আর সংস্কার না করার কারণে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বছরের পর পর এসব স্থাপনা দখল করে রেখেছেন স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। বর্তমানে তাদের কাছ থেকে আরেক প্রভাবশালীরা দখলে নিচ্ছেন।
জিকের এই স্থাপনাগুলো দখলমুক্ত করে ভাড়া দিলে বা অন্য কোন প্রকল্পে ব্যবহার করলে সরকার রাজস্ব পেত।
একই এলাকার বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম বলেন, জিকের বিভিন্ন শাখা অফিসে শত শত বিঘা জমি পড়ে আছে। সেসব শাখা অফিসে বড় বড় গাছ রাতের আঁধারে লোকজন কেটে নিয়ে যায়। দেখভালের কেউ না থাকায় দিন দিন দখল হয়ে যাচ্ছে। দখলদাররা ঘর-বাড়ি তৈরী করেছে। আগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা মাঝে মধ্যে আসত। কিন্তু এখন আর আসে না। জিকে সেচ খালেও এখন পানি ঠিক মত দেওয়া হয় না। যে কারণে সেচ খালের লোহার গেটগুলোও দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় কৃষক ও বাসিন্দাদের কথা বিবেচনা করে জিকের এসব স্থাপনা পুনরুদ্ধার করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার দাস বলেন, এখানে আমি নতুন এসেছি আর আমাদের লোকবল সংকটের কারণে আমরা আমাদের শাখা অফিসসহ স্থাপনাগুলো দেখভাল করতে পারছি না। কিছু কিছু স্থানে দখলদার উচ্ছেদ করা হয়েছে বলে আমি জানি। নতুন করে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। অনুমোদন হলেই এসব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে।
বিডি প্রতিদিন/এএ