আমি ঘুড়ি উড়াতে গেছি নদীর তীরে। দূরে নীল আকাশ। নদীর ওপারে কাশফুলের বাগান। শাদা কাশফুল মিশে গেছে নীল আকাশের সঙ্গে। আমার ঘুড়ির রং লাল। টকটকে আগুনের মতো রং। লাটাই ঘুরিয়ে ঘুড়িটাকে ছেড়ে দিলাম বাতাসে। একটা দুটো গোঁত্তা খেয়ে ঘুড়িটা শো করে উড়ে গেল। কাশফুলের বাগানের উপর দিয়ে ঘুড়িটা এগিয়ে চলেছে নীল আকাশের দিকে। আমি লাটাই নিয়ে কসরত করছি। কিন্তু এক সময় ঘুড়িটা আমার কথা শুনছে না। আমাকেই যেন সে টেনে উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
এক সময় দেখি, লাটাইয়ের সুতো নেই। লাটাইটা শুধু হাতে আছে। ঘুড়িটা সুতো ছেড়ে কোনো দূরে চলে গেছে বুঝে উঠতে পারলাম না। কাশবন, নীল আকাশ-কোনোখানে ঘুড়িটা নেই। কোথায় গেল? আমি যতদূর দৃষ্টি যায় তাকিয়ে খোঁজার চেষ্টা করলাম ঘুড়িটাকে। নাহ-কোথাও নেই। তাহলে কি ঘুড়িটা আকাশের দিকে চলে গেছে? নীল মেঘের মাঝে হারিয়ে গেছে?
আমি লাটাই হাতে নদীর তীরে ধীরে ধীরে হেঁটে যাচ্ছি। নদীর শান্ত জল। দুচারটে পাখি উড়ে যাচ্ছে। নদীর বুকে হঠাৎ দেখি ঘুড়ির ছায়া। কিন্তু আকাশের বুকে তো ঘুড়িটা দেখা যাচ্ছে না। কেমন রহস্যময় মনে হলো ব্যাপারটা। আকাশের দিকে তাকিয়ে আমি হাঁটতে লাগলাম। নীল মেঘের মধ্যে শাদা রঙের একটা ঘুড়ি দুলছে। ওটাই কি আমার ঘুড়ি? কে জানে।