একদিন বিকেলে, ছোট্ট শহরের পাশের কাশবনে দুষ্টু মেঘু খেলতে গিয়েছিল। কাশবনটা অনেক বড়ো আর এতটাই সাদা, যেন সাদা তুলোর সমুদ্র। মেঘু একা একাই ঘুরতে ঘুরতে এক কোণে এসে দেখে, সেখানে ছোট্ট একটা ভূতের ছানা বসে কাঁদছে। মেঘু অবাক হয়ে কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘তুমি কে? কাঁদছ কেন?’
ভূতের ছানাটা মাথা তুলে বলল, ‘আমি ভুতু। আমি আমার মাকে খুঁজে পাচ্ছি না।’ মেঘু বুঝতে পারল, ভুতু একটু ভয় পেয়েছে। কিন্তু মেঘু মোটেই ভয় পেল না। সে ভাবল, ‘ভূত হলেও, সে তো আর ছোট্ট বাচ্চা, ভয় পাওয়ার কিছু নেই।’
মেঘু বলল, ‘আমি তোমার বন্ধু হবো, চলো আমরা তোমার মাকে খুঁজে বের করি।’ তারা কাশবনের ভিতর দিয়ে হাঁটতে শুরু করল। হাঁটতে হাঁটতে তারা অনেক মজার জিনিস দেখতে পেলো-মোমবাতির আলোয় নাচানাচি করা পরীদের, বাতাসে ভাসমান জোনাকি পোকা, আর দূরে সাদা মেঘের মতো এক বিশাল মায়াবী দুর্গ।
মেঘু আর ভুতু দুর্গের দিকে এগিয়ে গেল। সেখানে পৌঁছে দেখে, ভুতুর মা অপেক্ষা করছে। সে তার ছানাকে দেখে খুশিতে ভেসে গেল। ভুতু দৌড়ে গিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরল। মেঘুকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলল, ‘তুমি না থাকলে আমি মাকে খুঁজে পেতাম না। তুমি খুব ভালো বন্ধু!’
ভুতুর মা মেঘুকে কাশফুলের তৈরি এক সুন্দর মুকুট উপহার দিলো। বলল, ‘এটা তোমার জন্য, তুমি সত্যি সাহসী।’
মেঘু হাসি মুখে মুকুট পরলো, আর বিদায় নিয়ে বাড়ির পথে রওনা দিল। বাড়ি ফিরে মেঘু যখন বন্ধুদের কাশবনের গল্পটা বলল, তারা সবাই অবাক হয়ে বলল, ‘আমরাও একদিন ভুতুর সাথে খেলতে যাবো!’
সেই থেকে কাশবনটা মেঘু ও তার বন্ধুদের প্রিয় জায়গা হয়ে উঠল। আর সেখানে, এক কোনে ভুতু তার মাকে নিয়ে খুশিতে খেলতে থাকে-সাদা কাশের বনে, যেখানে ভয় নেই, আছে শুধু বন্ধু আর মজা।