দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা কমছে না। এডিস মশা বাহিত এ রোগটিতে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মারা যাচ্ছে বেশি তরুণরা। সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে এ রোগের বিস্তার ঘটনার শঙ্কা আরও বাড়ছে। এ বছর ১৭৭ জন মারা গেছেন ডেঙ্গুতে। এরমধ্যে ঢাকার দক্ষিণ সিটিতে সর্বাধিক ৯৫ জন। তবে ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা বেশি হলেও মারা যাচ্ছে নারীরা বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গুতে নারীরা আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হলে হাসপাতালে দেরিতে যান। ডেঙ্গুর হটস্পট নির্ধারণ করে সঠিক ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দেন কীটতত্ত্ববিদরা।
৩ অক্টোবর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছর ডেঙ্গু জ্বরে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭৭ জনে। মোট মৃতের মধ্যে ৫১ দশশিক ৪ শতাংশ নারী এবং ৪৮ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ। এছাড়া এ বছর ডেঙ্গুতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩৪ হাজার ৪৩৮ জন। আক্রান্তের মধ্যে ৬৩ দশমিক ১ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৬ দশমিক ৯ শতাংশ নারী রয়েছেন।
ঢাকা সিটিতে ১২০ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে দক্ষিণ সিটিতে মারা যাওয়ার সংখ্যা সর্বাধিক ৯৫ জন। ঢাকা উত্তরে ২৫ জন। ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশন ব্যতীত) ৬ জন, বরিশাল বিভাগে ১৬ জন, চট্টগ্রামে ২২ জন, খুলনা বিভাগে ১০ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন মারা গেছেন।
বয়সভিত্তিক মৃত্যুর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২১ থেকে ২৫ বছর বয়সী সর্বোচ্চ মৃত্যু ২১ জন। এরপরে রয়েছে ২৬ থেকে ৩০ বছর বয়সী ২০ জন। এতে দেখা যায়, শূন্য থেকে ৫ বছরের মধ্যে রয়েছে ৫ জন, ৬ থেকে ১০ বছরের মধ্যে ১১ জন, ১৬ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১২ জন, ৩১ থেকে ৩৫ বছরের ১৫ জন, ৩৬ থেকে ৪০ বছরের ৯ জন, ৪১ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে ১৩ জন, ৪৬ থেকে ৫০ বছরের রয়েছেন ১২ জন, ৫১ থেকে ৫৫ বছরের ১২ জন, ৫৬ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৭ জন, ৬১ থেকে ৬৫ বছরের রয়েছেন ৯ জন, ৬৬ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৭ জন, ৭১ থেকে ৭৫ বছরের মধ্যে ৭ জন, ৭৬ থেকে ৮০ বছরের রয়েছেন ৭ জন এবং ৮০ বছরের উপরে মারা গেছেন ২ জন।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, আইইডিসিআর’র সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন গণমাধ্যমে বলেন, গত বছরের তুলনায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা এ বছর বেশি না হলেও মৃত্যুহার বেশি। এ বছর এখন পর্যন্ত একদিকে প্রচণ্ড তাপ, অন্যদিকে প্রচণ্ড বৃষ্টি। এ রকম উত্তপ্ত ও আর্দ্র আবহাওয়ায় এডিস মশার ডিম ও প্রজনন খুব দ্রুত হয়। বৃষ্টি হচ্ছে, আবার গরম পড়ছে। কাজেই একদিকে মশা নিয়ন্ত্রণ, অন্যদিকে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় আমাদের জোর দিতে হবে।
বিডি প্রতিদিন/এএ