চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৪.৬ শতাংশ ছিল, যা বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ছিল ৪.৭ শতাংশ এবং প্রথম প্রান্তিকে ছিল ৫.৩ শতাংশ। চীনের সরকার চলতি বছরের জন্য প্রায় ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, তবে তৃতীয় প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধির এই হ্রাস নীতি প্রণেতাদের উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলেছে।
বিশ্লেষকরা আরও কম প্রবৃদ্ধির আশঙ্কা করলেও, খুচরা বিক্রয় ও কারখানার উৎপাদনের মতো অন্যান্য পরিসংখ্যান পূর্বাভাসকে ছাড়িয়ে গেছে। তা সত্ত্বেও, প্রবৃদ্ধির হার ৫ শতাংশের নিচে থাকার কারণে চীনের অর্থনৈতিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য আরও বড় ধরনের প্রণোদনার প্রয়োজন হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চীন বিভাগের সাবেক প্রধান ঈশ্বর প্রসাদ মনে করেন, সরকারকে চতুর্থ প্রান্তিকে আরও বড় প্রবৃদ্ধির দিকে মনোযোগ দিতে হবে। মুডিস অ্যানালিটিকসের অর্থনীতিবিদ হ্যারি মারফি ক্রুজ বলছেন, প্রণোদনার মাধ্যমে ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সম্ভাবনা থাকলেও, অর্থনীতির কাঠামোগত সমস্যাগুলোর মোকাবিলায় আরও পদক্ষেপ নিতে হবে।
চীনের আবাসন খাতের মন্দা পরিস্থিতি ক্রমশ গভীর হচ্ছে। সেপ্টেম্বরে নতুন বাড়ির দাম প্রায় এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে কমেছে। আইএনজি ব্যাংকের চীনা অর্থনীতিবিদ লিন সং বলেছেন, আবাসন খাত এখন চীনের প্রবৃদ্ধির সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে কাজ করছে। বাড়ির মজুত ও মূল্য স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত এই খাতের মন্দা অব্যাহত থাকবে।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি বাড়াতে পিপলস ব্যাংক অব চায়না মহামারির পর সবচেয়ে বড় প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, যেখানে ব্যাংক ঋণের সুদ কমানোসহ বেশ কিছু পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। চীনের সরকারও অর্থনীতির গতি ত্বরান্বিত করতে একাধিক প্রণোদনা পরিকল্পনা চালু করেছে। তবুও, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ধীরগতির কারণে চীনের রপ্তানি ও অভ্যন্তরীণ ভোক্তা চাহিদা কমে গেছে, যা দেশটির অর্থনীতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল