সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ০০:০০ টা

যাত্রী হয়রানি বন্ধ হোক

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর যাত্রী হয়রানির আখড়া হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে। এ বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের কার্যকলাপে মনে হতেই পারে যাত্রী নিগ্রহকে তারা হয়তো অবশ্য পালনীয় কর্তব্য বলে ভেবে থাকেন। তাদের হাত থেকে রাজনীতিক, ব্যবসায়ী এমনকি শিক্ষার্থীরাও রক্ষা পান না। বিদেশে কর্মরত শ্রমজীবীদের তো তারা যথেচ্ছাচার টার্গেট হিসেবে বিবেচনা করেন। স্বল্প শিক্ষিত যাত্রীদের উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করে ও তাদের পাসপোর্ট আটক করে টাকা আদায় অথবা মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা অহরহই ঘটছে। মহান আউলিয়া হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর নামাঙ্কিত এই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বিভিন্ন স্তরের অসৎ ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কারণে কলঙ্কিত হতে বসেছে। দেশের বৃহত্তম বিমানবন্দরের যাত্রী হয়রানির বিষয়টি একটি ওপেন সিক্রেট। বিষয়টি সরকারের মাথাব্যথার কারণ হয়েও দাঁড়িয়েছে। মন্ত্রিসভা থেকে শুরু করে বিমানবন্দর-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার বিভাগীয় বৈঠকেও যাত্রী হয়রানি নিয়ে প্রায়ই আলোচনা হচ্ছে। হয়রানি বন্ধের সিদ্ধান্তও নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তার বাস্তবায়ন অকল্পনীয় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাত্রী হয়রানি থামানো যাচ্ছে না কোনোভাবেই। বরং দিন দিন হয়রানির মাত্রা বেড়েই চলেছে। পত্রপত্রিকায় হয়রানি নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ হলে দু-এক দিন ঊধর্্বতন কর্মকর্তারা কিছুটা তৎপর থাকেন। তারপর আবার সব কিছু আগের মতোই চলতে থাকে। অভিযোগ উঠেছে, যারা যাত্রীদের সেবা দেওয়ার দায়িত্ব নিয়ে বিমানবন্দরে নিয়োজিত আছেন, তাদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশই হয়রানির সঙ্গে জড়িত। দায়িত্ব পালন আর সেবার নামে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র। রক্ত-ঘাম ঝরা পরিশ্রম করে যারা বিদেশ থেকে দেশে অর্থ নিয়ে আসেন তারাও নিয়মিত ভোগান্তির শিকার হন। মাঝে মাঝে হয়রানির মাত্রা এতটাই বৃদ্ধি পায় যে অনেক প্রবাসীকে বিমানবন্দরে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়। ইমিগ্রেশন থেকে বাইরে বেরিয়েও অস্বস্তির শেষ থাকে না। সেখানে থাকে আর্মড পুলিশ নামধারীদের অপতৎপরতা। তল্লাশির নামে চলে চরম হয়রানি। সাংবাদিক পরিচয়ধারী দুর্বৃত্তদের উৎপাতের মুখেও পড়তে হয় যাত্রীদের। উদ্দেশ্য যেভাবেই হোক অর্থ আদায়। এ বিমানবন্দরের দুর্নাম ঘুচাতে যাত্রী নিগ্রহের অবসান হওয়া উচিত। লুটেরা কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে নেওয়া উচিত আইনগত ব্যবস্থা। এ ব্যাপারে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপের কথাও ভাবতে হবে।

সর্বশেষ খবর