বুধবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৪ ০০:০০ টা

চালের বাজারে অস্থিরতা

বাজারে চালের দাম হঠাৎ করেই ঊর্ধ্বমুখী হওয়া শুরু করেছে। কেজি প্রতি দাম বৃদ্ধি পেয়েছে দুই থেকে তিন টাকা। বলা হচ্ছে ধানের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় চালের দামের ওপর তার প্রভাব পড়ছে। নতুন ধান না ওঠা পর্যন্ত চালের দাম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই- এমন কথাই বলছেন ব্যবসায়ীরা। বাজারে চালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার পেছনে মজুদ ঘাটতি বা দৃশ্যমান কোনো সংকটের সম্পর্ক নেই। বছরের এ সময় বেশির ভাগ কৃষকের ঘরে ধান থাকে না। ফলে ফড়িয়াদের গুদামজাত ধানের ওপর মিল মালিকদের নির্ভর করতে হয়। ধান ওঠার আগ পর্যন্ত চালের বাজারের নিয়ন্ত্রণ থাকে তাদের হাতে। চালের দাম চার-পাঁচ মাস স্থিতিশীলতার পর হঠাৎ বৃদ্ধি পেলেও বড় ধরনের কোনো সংকট সৃষ্টির সুযোগ নেই বলেই মনে হচ্ছে। কারণ সরকারের হাতে ধান-চালের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারেও চাল-গমের দাম এখন কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। চালের দাম বৃদ্ধিতে প্রতিকূল অবস্থায় পড়েছে সমাজের খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ। কৃষকের ঘরে ধান না থাকায় চালের মূল্যবৃদ্ধি উৎপাদকদের কোনো উপকারে আসছে না। বরং কৃষকদের এক বড় অংশকে যেহেতু এ সময় বাজার থেকে চাল কিনতে হয়, সেহেতু মূল্যবৃদ্ধিতে তারাও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। নাটোরে বর্তমানে মিনিকেট ধান বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ থেকে ১০০০ টাকা, জিরাশাইল ১ হাজার ২০০ এবং পারিজাত ৮৫০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। মৌসুমের শুরুতে এসব ধানের দাম ছিল যথাক্রমে ৮৫০, ১ হাজার ১০০ এবং ৬৫০ টাকা। অন্য চালের দামও বেড়েছে একইভাবে। চালের দাম বৃদ্ধি দেশের গরিব মানুষের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দেখা দেয়। ফলে কোনোভাবেই যাতে কৃত্রিম সংকট দানা বেঁধে না ওঠে সে দিকে নজর দিতে হবে। মজুদদারির মাধ্যমে কেউ কৃত্রিমভাবে সংকট সৃষ্টির পাঁয়তারা করলে তাদের শক্ত হাতে দমন করতে হবে। নতুন ধান না ওঠা পর্যন্ত বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারকে মনোযোগী হতে হবে। প্রয়োজনে গরিব মানুষের সুবিধার্থে খোলাবাজারে রেয়াতকৃত দামে চাল বিক্রির উদ্যোগ নিতে হবে। খাদ্যপণ্যের দাম ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকা সরকারের জনপ্রিয়তার ব্যারোমিটার হিসেবে বিবেচিত হয়। নিজেদের স্বার্থেই সরকার চালের বাজার স্থিতিশীল রাখার দিকে নজর দেবে এমনটিই আশা করা হচ্ছে।

 

 

 

সর্বশেষ খবর