শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৪ ০০:০০ টা

চার প্রজাতির নতুন আলু

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা চার প্রজাতির রঙিন আলু উদ্ভাবন করেছেন। নতুন প্রজাতির আলুর পুষ্টিগুণ প্রচলিত অন্য জাতের আলুর চেয়ে যেমন বেশি তেমনি এর ফলনও হবে তুলনামূলকভাবে ভালো। নতুন উদ্ভাবিত রঙিন আলুতে সাদা জাতের আলুর তুলনায় অ্যান্থোসায়ানিন ও ফেনোলিক কম্পাউন্ড রয়েছে অনেক বেশি। বিজ্ঞানীদের মতে, অ্যান্টি-অঙ্েিডন্ট মানবদেহে মরণব্যাধি ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। নতুন চার প্রজাতির আলু খেলে প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা যেমন পূরণ হবে, তেমনি হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, বয়োবৃদ্ধিজনিত বুদ্ধি হ্রাস রোধ এবং মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সহায়তা করবে। গোলআলু-১, গোলআলু-২, গোলআলু-৩ ও গোলআলু-৪ নামের এ রঙিন আলুতে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেল আছে। স্মর্তব্য, গবেষক দলের প্রধান বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) হর্টিকালচার বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এ রহিম ২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন্স-মেডিসন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২৮টি রঙিন গোলআলুর বীজ এ দেশে নিয়ে আসেন। এরপর বাকৃবি জার্মপ্লাজম সেন্টারের মাঠ গবেষণাগারে এ নিয়ে গবেষণা শুরু হয়। প্রায় চার বছর নিরন্তর গবেষণার পর পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ চার প্রজাতির আলু উদ্ভাবন করতে সক্ষম হন তারা। গোলআলু-১ প্রজাতি কালো ও ডিম্বাকৃতির। প্রতি হেক্টরে ২০ থেকে ২৫ টন উৎপাদন হওয়া এ আলুর ভিতরটা গাঢ় কালচে থেকে গোলাপি রঙের মাংসলযুক্ত। গোলআলু-২ প্রজাতি লালচে হলুদ ও লম্বাটে। প্রতি হেক্টর জমিতে এর উৎপাদন ২০ থেকে ৩০ টন। গোলআলু-৩ প্রজাতি হলুদ ডিম্বাকার। গাঢ় হলুদ বর্ণের ভিতরের অংশটার মতো দেখতে। প্রতি হেক্টরে উৎপাদন ২৫ থেকে ৩০ টন। গোলআলু-৪ প্রজাতি কালো ও লম্বাটে। তবে ভিতরের অংশটা গোলাপি ও লালচে। হেক্টরপ্রতি এর উৎপাদন ১৮ থেকে ২২ টন। উর্বর বেলে ও দোঅাঁশ মাটিতে এসব প্রজাতির আলু চাষ করা যায়। নভেম্বর মাসে বীজ বপন করলে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে আলু সংগ্রহ করা যায়। জলাবদ্ধতাহীন দেশের সব এলাকাতেই আলু চাষ করা যাবে। আলু বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান কৃষি ও খাদ্যপণ্য। বাংলাদেশ অচিরেই আলু রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। নতুন আলু দেশে বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা পেলে তা হবে এক বড় অর্জন। নতুন জাতের আলু উদ্ভাবনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীদের আমাদের অভিনন্দন।

 

 

সর্বশেষ খবর