শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৪ ০০:০০ টা

ফরমালিন রোধে সাফল্য

দেশে ফরমালিন আমদানি লক্ষণীয়ভাবে হ্রাস পেয়েছে। রাসায়নিক আমদানিসংক্রান্ত বিধি সংশোধনের সুফল হিসেবে ব্যক্তিখাতে ফরমালিন আমদানি শূন্যের কোঠায় পৌঁছেছে। আগের দুই বছরে প্রতি মাসে গড়ে ৮০০ টন ফরমালিন আমদানি হলেও গত আড়াই মাসে আমদানি হয়েছে ২৬৬ টন। এ ফরমালিন আমদানি হয়েছে তিনটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের নামে আসবাবপত্র তৈরির কাঁচামাল হিসেবে। পত্রিকান্তরে ফরমালিন আমদানি হ্রাস পাওয়া এবং ব্যক্তিখাতে আমদানি বন্ধের যে তথ্য প্রকাশ পেয়েছে তা স্বস্তিদায়ক। তবে এ স্বস্তি বজায় রাখতে শিল্প প্রতিষ্ঠান বা অন্য ক্ষেত্রে ব্যবহারের নামে যে ফরমালিন আমদানি হচ্ছে তা যাতে খোলাবাজারে পাচার না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কোনো প্রতিষ্ঠান শিল্প খাতে কিংবা অন্য কোনো কাজে ব্যবহারের জন্য ফরমালিন আমদানি করে খোলাবাজারে বিক্রি করে দিলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা যাতে করা যায় সে পথও খোলা রাখতে হবে। খাদ্যপণ্যে ফরমালিন ব্যবহার জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছিল। মাছ, ফলমূল, তরিতরকারিসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য তাজা রাখতে অবাধে ব্যবহার করা হতো ফরমালিন। মানুষ খাদ্য গ্রহণ করে পুষ্টির জন্য। ফরমালিন মিশ্রিত খাদ্য গ্রহণ পুষ্টির বদলে দেশের মানুষকে নানা কঠিন রোগের দিকে ঠেলে দিচ্ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে কিডনি, লিভার বিকল, ক্যান্সারসহ নানা জটিল রোগ বিস্তারের পেছনে ফরমালিন মিশ্রিত খাদ্য ব্যবহার অনেকাংশে দায়ী বলে মনে করা হয়। বর্তমান সরকারের যে সব ভালো কাজ অভিনন্দন পাওয়ার যোগ্য ফরমালিনের অপব্যবহার রোধ তার মধ্যে অন্যতম। সরকার সচেতন হলে যে কোনো ধরনের অনাচার যে বন্ধ করা সম্ভব ফরমালিনের অপব্যবহার রোধ তারই প্রমাণ। এ বিষয়ে আরও আগে থেকে সচেতন হলে ফরমালিনের অপব্যবহারে জনস্বাস্থ্যের যে ক্ষতি হয়েছে তার অনেকটাই এড়ানো সম্ভব হতো। ফরমালিন আমদানি কমে যাওয়া দেশবাসীর জন্য একটি সুসংবাদ। তবে এই সাফল্য ধরে রাখতে হবে। ফরমালিন আগ্রাসন ঠেকানোর সাফল্যে প্রশাসন আত্মপ্রসাদ লাভ করে নিশ্চুপ বসে থাকলে আবারও এ অভিশাপ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। যেমনটি হয়েছে পলিথিন ব্যবহারের ক্ষেত্রে। এ জন্য সরকারকে চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। শুধু ফরমালিন নয়, খাদ্যপণ্যে যে কোনো ধরনের রাসায়নিকের অপব্যবহার রোধেও উদ্যোগ নিতে হবে।

 

 

সর্বশেষ খবর