রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১৪ ০০:০০ টা

বিদেশি ট্রলারের মাছ চুরি

বাংলাদেশের সমুদ্রসীমাকে মৎস্য সম্পদের সোনালি ভাণ্ডার হিসেবে অভিহিত করা হয়। সমুদ্রসীমায় গ্যাস, তেল বা অন্য কোনো খনিজ সম্পদ পাওয়া না পাওয়ার বিষয়টি অনিশ্চিত হলেও মৎস্য সম্পদের বিষয়টি প্রমাণিত। আর এ সম্পদ লুণ্ঠনে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় বিদেশি ট্রলারের আনাগোনা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। স্বাধীনতার আগে থেকেই সমুদ্রসীমায় হানা দিতো ভারত, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, মিয়ানমারের জেলেরা। দেশের নৌবাহিনীর টহল ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কোস্টগার্ড গঠন বিদেশি ট্রলারের অবাধ যাতায়াত কিছুটা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এলেও তা সন্তুষ্ট হওয়ার মতো পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারেনি। দেশের মৎস্যজীবীরা বলেছেন, বিদেশি ট্রলার এবং জলদস্যুদের দৌরাত্ম্য বন্ধ হলে বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুণ মাছ আহরণ করতে পারবে দেশীয় মৎস্যজীবীরা। বিশেষ করে বাঙালির প্রিয় মাছ ইলিশের দাম সে অবস্থায় ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা সম্ভব হবে। দেশীয় মৎস্যজীবীরা মাছের প্রজনন মৌসুমে মাছ ধরা থেকে যখন বিরত থাকে চৌর্যবৃত্তিতে নিয়োজিত বিদেশি ট্রলারগুলো সে সময় থাকে বেশি সক্রিয়। বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় বিদেশি ট্রলারগুলো মাছ চুরিতে কিভাবে জড়িত তার প্রমাণ মেলে মাত্র আট দিনে আটটি ট্রলার ও ৭৫ বিদেশি মৎস্যজীবীর ধরা পড়ার ঘটনায়। বিদেশি ট্রলারগুলো শুধু মাছই চুরি করছে না অনেক সময় বাংলাদেশি ট্রলারে ডাকাতি করে মাছ কেড়ে নিচ্ছে এবং জেলেদের মারধরও করছে। অভিযোগ রয়েছে, দেশের উপকূলীয় এলাকার জলদস্যুদের সঙ্গে বিদেশি ট্রলার বা মৎস্যজীবীদের সম্পর্ক রয়েছে। এ সম্পর্কের কারণে সাগরে যেসব ইলিশ ধরা পড়ে তার এক বড় অংশ সাগরেই বিদেশি ট্রলারের কাছে বিক্রি করতে বাধ্য হয় দেশি মৎস্যজীবীরা। দেশের মতো সমুদ্রসীমার মালিকও এ দেশের ১৬ কোটি মানুষ। এ সম্পদের নিরাপত্তা দান সরকারের অবশ্য কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। এ কর্তব্য পালনে সমুদ্রসীমায় বিদেশি ট্রলারের অনুপ্রবেশ বন্ধে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। সমুদ্রসীমার নিরাপত্তা রক্ষায় কোস্টগার্ডের শক্তিবৃদ্ধির পাশাপাশি নৌবাহিনীর নজরদারিও বাড়াতে হবে। দেশের উপকূলীয় এবং সাগরসীমার নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে দেশের মৎস্যজীবীরা বর্তমানের চেয়ে অন্তত দ্বিগুণ মাছ আহরণে সক্ষম হবে। দেশে মাছের সরবরাহ বৃদ্ধির পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেও তা ভূমিকা রাখবে।

 

 

সর্বশেষ খবর