রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১৪ ০০:০০ টা

বিমানবন্দরের নিরাপত্তা

দেশের প্রধান বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকার কোনো অবকাশ নেই। দুনিয়ার সব দেশে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। অথচ ভুয়া নিরাপত্তা পাস ও 'ডি পাস' ব্যবহার করে বিমানবন্দরের স্পর্শকাতর এলাকায়ও বহিরাগতরা প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছে এমন অভিযোগ ওপেন সিক্রেট। চোরাচালানিদের অভয়ারণ্য হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে দেশের প্রধান বিমানবন্দরটি। বলা হয়, চোরাচালানকে উৎসাহিত করার জন্যই বিমানবন্দরের আগমনি বিভাগের কার্যক্রম এখনো একটি স্ক্যানার দিয়েই চলছে। এসব অনিয়মের সঙ্গে সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটি এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সের কর্তাব্যক্তিরা জড়িত এমন অভিযোগই তুলে ধরা হয়েছে বাংলাদেশ প্রতিদিনের এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে। অভিযোগটি নিঃসন্দেহে গুরুতর এবং তা অনাকাঙ্ক্ষিতও বটে। বিমানবন্দরের বেহাল নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে অতীতে কার্গো ভিলেজে বড় ধরনের চুরির ঘটনা ঘটেছে। পরিত্যক্ত অবস্থায় এ স্পর্শকাতর স্থাপনা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে অস্ত্র ও গোলাবারুদ। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিমানবন্দরে আর্মড ব্যাটালিয়ন পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাদের উপস্থিতিতে নিরাপত্তাই শুধু নয়, পরিবেশগত অবস্থারও উন্নতি হয়। কিন্তু বিমানবন্দরভিত্তিক চোরাচালানি সিন্ডিকেটের চাপে আর্মড পুলিশের কর্মকাণ্ড সঙ্কুচিত করা হয়েছে। দুনিয়াজুড়ে প্রধান প্রধান বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা যখন নিশ্ছিদ্র করার চেষ্টা চলছে, তখন শাহজালালে দেখা মিলছে বিপরীত চিত্র। নিরাপত্তা ব্যবস্থা শিথিল থাকার কারণে শাহজালাল বিমানবন্দর সোনা চোরাচালানিদের আখড়া হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ বিমানবন্দরে যে পরিমাণ সোনা ধরা পড়ছে তাতে এটিকে সোনার খনি হিসেবে আখ্যায়িত করার সুযোগ মিলছে। বলা হয় প্রতিটি সোনার চালানের সঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সিভিল অ্যাভিয়েশন এবং কাস্টমসের কর্তাব্যক্তিদের সম্পর্ক রয়েছে। দেন দরবারের ঘাটতি হলে সে চালানই শুধু ধরা পড়ে। এ বিমানবন্দর হয়ে যে চোরাচালান হয়, ধরা পড়া সোনা তার এক কিংবা দুই শতাংশের বেশি নয়। দেশের প্রধান বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার শিথিলতা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে শাহজালাল বিমানবন্দরের নিরাপত্তাহীনতার ফাঁকফোকর বন্ধে উদ্যোগ নিতে হবে। এটি সরকারের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

সর্বশেষ খবর