শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

ভোজ্যতেল নিয়ে স্বেচ্ছাচার

রান্নায় তেল ব্যবহার খাবারের স্বাদ আনে। এ ছাড়া খাবার স্বাস্থ্যপ্রদ করার জন্যও তেল অপরিহার্য। নইলে সীমিত আয়ের মানুষ হয়তো অনেক আগেই তেল খাওয়া বন্ধ করে দিতেন। কারণ প্রতিবছর লাফিয়ে লাফিয়ে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ছে। বাড়ছে আর সাধারণ ভোক্তার জন্য দুঃসহ যন্ত্রণা তৈরি করছে। একদা শর্ষে, তিল ও বাদাম তেল ছিল বাঙালির ভোজ্য। এখন প্রধান ভোজ্য সয়াবিন তেল; এরপরই পামঅয়েল। বিদেশ থেকে এনে এ দেশে শোধন করে এ দুটো তেল বিপণন করা হয়। কাঁচা সয়াবিন তেল ও কাঁচা পামঅয়েল যারা আমদানি করেন এবং শোধন করেন ভোজ্যতেলের বাজারের কলকাঠি তাদেরই কব্জায়। দর বাড়ালেন কেন? তাদের উত্তর 'আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়েছে, তাই এ দেশেও বাড়াতে হয়েছে। লোকসান দিয়ে তো বাণিজ্য চলে না।' খুবই খাঁটি কথা। কিন্তু দর যখন আন্তর্জাতিক বাজারে কমে তখন সঙ্গতি রেখে এ দেশে দাম কমানোর উদাহরণ বিরল। চতুরতার সঙ্গে তখন বলা হয়, 'আগে আনা ক্রুড দিয়ে তৈরি তেল রয়েছে বাজারে। দর তো আগের মতোই থাকবে।' ভোগ্যপণ্য নিয়ে এ ধরনের নষ্টামি ও স্বেচ্ছাচার রোধ করার জন্য সক্রিয় রয়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্যারিফ কমিশন। বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কমিশন সেপ্টেম্বর মাসের বাজার পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে সরকারকে জানিয়েছে, ভোজ্যতেলের বাজারমূল্য যৌক্তিক পর্যায়ে নেই। পণ্যটি নিয়ে এক ধরনের ভোজভাজির খেলা চলছে। কমিশনের হিসাব অনুযায়ী প্রতিলিটার খোলা সয়াবিন ৮৪ টাকা ও পামঅয়েল ৬৩ টাকা হওয়া উচিত। বোতলজাত সয়াবিন লিটার ৯৯ টাকা ও পাঁচ লিটার কন্টেইনার ৪৬৬ টাকা হওয়া উচিত। অথচ বাজারে খোলা সয়াবিন লিটার ৯০ টাকায়, পাম ৮০ টাকায়, বোতলজাত সয়াবিন কোম্পানিভেদে ১১৬-১১৭ টাকা এবং পাঁচ লিটার সয়াবিন ৫৭০-৫৮০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। ক্রেতারাও জেনে গেছেন, এটা অন্যায় দর। কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে ইদানীং ভোজ্যতেলের দাম কমেছে। তবু দেশে দর বেশি কেন? ক্রেতারা কারও কাছে জবাব পাচ্ছেন না। তবে জানা গেছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ভোজ্যতেলের বাজারে মিল মালিক ও ক্রুড আমদানিকারকদের স্বেচ্ছাচার বন্ধ করে ভোক্তাসাধারণের জীবনে স্বস্তিদানে একটি স্থায়ী ব্যবস্থা বলবৎ করা হবে- বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছে এই-ই আমাদের প্রত্যাশা।

সর্বশেষ খবর