শনিবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

ঝুট সন্ত্রাসীদের ধরুন

ঝুট ব্যবসা আর সন্ত্রাস যেন সমার্থক শব্দ। সারা দেশে গার্মেন্টের ঝুট ব্যবসার যারা নিয়ন্ত্রক তাদের প্রায় সবারই পরিচয় সন্ত্রাসী হিসেবে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১১ হাজার ঝুট সন্ত্রাসীর কারণে আইনশৃঙ্খলা হুমকির মুখে পড়ছে। ঝুট ব্যবসার আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে প্রায়ই ঘটছে খুনখারাবির ঘটনা। আশির দশকে দেশে গার্মেন্ট শিল্পের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় ঝুট ব্যবসা। শুরু থেকেই এ ব্যবসার নিয়ন্ত্রকে পরিণত হয় গার্মেন্ট মালিকের পোষ্য সন্ত্রাসীরা। অভিযোগ করা হয়, ঝুট ব্যবসা সন্ত্রাসী পোষার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করছে। ঝুট সন্ত্রাসীদের কাছে এখন গার্মেন্ট মালিকরাও অনেকাংশে জিম্মি। তারা খোলাবাজারে বিক্রির বদলে নামমাত্র মূল্যে নির্ধারিত সন্ত্রাসীদের কাছে ঝুট বিক্রি করতে বাধ্য হন। এর অন্যথা হলে সমূহ সর্বনাশের আশঙ্কা থাকে। ঝুট ব্যবসায়ীদের কাছে গার্মেন্ট ব্যবসায়ীরা জিম্মি হয়ে পড়লেও ব্যবসায়ী নামের সন্ত্রাসী চক্রের উত্থানের পেছনে তাদের ভূমিকাই যে দায়ী তা বললে খুব একটা অত্যুক্তি হবে না। গার্মেন্ট মালিকরা এক সময় ধারেকাছের উঠতি সন্ত্রাসীদের লালন করতেন শ্রমিকদের সামাল দেওয়ার জন্য। এর বিনিময়ে গার্মেন্টের ঝুট তাদের কাছে বিক্রি করা হতো সস্তা দামে। শ্রমিকদের ওপর খবরদারি করার জন্য সন্ত্রাসী পোষার প্রয়োজন অনেকটা ফুরিয়ে গেলেও ঝুট ব্যবসাকেন্দ্রিক সন্ত্রাসীদের সঙ্গে গার্মেন্ট মালিকদের আপস করেই চলতে হচ্ছে। কোনো গার্মেন্ট মালিকের সাধ্য নেই ঝুট খোলাবাজারে বিক্রি করা। গার্মেন্ট শিল্পে অসন্তোষ ও হামলার সিংহভাগ ঘটনায় ঝুট ব্যবসায়ী নামের সন্ত্রাসীদের হাত রয়েছে বলে মনে করা হয়। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে সে দলের আড়ালে ঝুট সন্ত্রাসীরা আশ্রয় নেওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও এই মানুষ শকুনদের কাছে কার্যত অসহায়। দেশের আইনশৃঙ্খলার জন্যও মূর্তমান হুমকি হয়ে বিরাজ করছে ঝুট ব্যবসাকেন্দ্রিক সন্ত্রাসীরা। জননিরাপত্তার স্বার্থে ঝুট সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা নেওয়া হবে এমনটিই প্রত্যাশিত। সন্ত্রাসী ও সমাজবিরোধীদের বিষদাঁত উপড়ে ফেলার ক্ষেত্রে এ ধরনের পদক্ষেপ ধনন্তরী বলে বিবেচিত হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

সর্বশেষ খবর