রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সশস্ত্র বাহিনী দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বলেছেন, গোটা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য বর্তমান সরকার এ বাহিনীর অধিকতর উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের পদক্ষেপ নিয়েছে। এ উদ্দেশ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু প্রণীত ১৯৭৪ সালের প্রতিরক্ষা নীতির আলোকে 'ফোর্সেস গোল-২০৩০' নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য বিশেষ তাৎপর্যের দাবিদার। সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে সশস্ত্র বাহিনীর অধিকতর উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ দ্রুত পদক্ষেপে এগিয়ে যাচ্ছে সামনের দিকে। মধ্যআয়ের দেশ হিসেবে এ দেশের উত্থান এখন সময়ের ব্যাপার। বঙ্গোপসাগরের প্রায় দেড় লাখ বর্গকিলোমিটার এলাকায় দেশের সার্বভৌমত্ব স্বীকৃত হয়েছে আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে। সবচেয়ে বড় কথা, বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর কার্যক্রম এখন শুধু দেশে নয়, বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে বাংলাদেশি সৈন্যদের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। এ প্রেক্ষাপটে সশস্ত্র বাহিনীকে বিশ্বমানের বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার তাগিদ সৃষ্টি হয়েছে। এ কথা ঠিক বাংলাদেশ শান্তিবাদী দেশ এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এককথায় চমৎকার। তার পরও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের স্বার্থে নিজেদের ভূমি, আকাশ ও সমুদ্রসীমাকে আগ্রাসী শক্তির ভ্রূকুটিমুক্ত রাখার জন্য সর্বাত্দক প্রস্তুতি রাখার বিকল্প নেই। বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী গড়ে উঠেছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে। জনগণের বাহিনী হিসেবে সশস্ত্র বাহিনী শুরু করেছিল তাদের অগ্রযাত্রা। সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নেও এ লক্ষ্য পূরণের বিষয়ে নজর রাখতে হবে। দেশের মানুষের বিপদের দিনে ঘূর্ণিঝড়, টর্নেডো, বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে আর্তমানবতার সেবায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা যে ভূমিকা রেখেছে, সে অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে মানবসেবার বিভিন্ন কার্যক্রমে তাদের সংশ্লিষ্টতা বাড়ানো যায় কিনা ভাবতে হবে। প্রতিরক্ষা উপকরণ সংগ্রহের ক্ষেত্রে পরনির্ভরতার বদলে দেশে তা উৎপাদনের বিষয়েও গুরুত্ব দিতে হবে। যে কোনো দেশের সশস্ত্র বাহিনী স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের নিশ্চয়তা বিধানে অবদান রাখে। রক্তের দামে কেনা স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখতে সশস্ত্র বাহিনী সম্পর্কে আমাদের যত্নবান হতেই হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।

সর্বশেষ খবর