মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

বন্ধ হোক অতিথি পাখি শিকার

অগ্রহায়ণের হিমেল হাওয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশে আসছে অতিথি পাখি। হাজার হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ধান ও মাছের সবুজ দেশ বাংলাদেশে আসছে অতিথি পাখিরা। দেশের হাওর-বাঁওড় এবং খাল-বিলে এখন অতিথি পাখির ভিড়। রাজধানীর গা লাগোয়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ ক্যাম্পাস পাখির কলতানে মুখর হয়ে উঠেছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সবুজ লেকগুলোতে সরালি, খঞ্জনা, পাতারি হাঁস, পাতিতারা, নোগা জোৎস্না, গয়ার, ধুপানি, বামুনিয়া হাঁস, লালমুড়িসহ নানা জাতের পাখির ভিড়। জীববিজ্ঞানীদের মতে, বাংলাদেশে শীত মৌসুমে ২৪৪ জাতির অতিথি পাখির আগমন ঘটে। সুদূর সাইবেরিয়া থেকেও তাদের আগমন ঘটে এ দেশে। অতিথি পাখির আগমন দেশের জীববৈচিত্র্যকে সমৃদ্ধ করছে। পরিবেশের সুরক্ষা এবং পরাগায়নের ক্ষেত্রেও তাদের অবদান অনস্বীকার্য। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, আমাদের দেশ ক্রমান্বয়ে অতিথি পাখির জন্য বধ্যভূমিতে পরিণত হচ্ছে। শহুরে শখের শিকারিদের গুলিতে শীত মৌসুমে প্রতিদিন শত শত পাখি প্রাণ হারায়। শিকারিদের পাতা ফাঁদে আটকা পড়ে রান্নাঘরে চালান হয় শত শত পাখি। যে পাখিরা প্রতিবছর অতিথি হয়ে আসে এই লাল-সবুজ পতাকার দেশে, তাদের একাংশের পক্ষে শীত মৌসুম শেষে ঘরে ফেরা সম্ভব হয় না কিছু লোভী মানুষের কারণে। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী অতিথি পাখি ধরা নিষিদ্ধ এবং তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু আইন প্রতিপালনে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর গাফিলতি অতিথি পাখির জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। রাজধানীতে প্রকাশ্যে বিক্রি করা হয় অতিথি পাখি। দেশের প্রতিটি জনপদে তো রাখ-ঢাক না রেখেই চলে অতিথি পাখি বিক্রি। এমনিতেই দেশের জলাশয় ও বন্যভূমি হ্রাস পাওয়ায় অতিথি পাখির বিচরণক্ষেত্র সীমিত হয়ে পড়েছে। তারপরও নির্বিচারে পাখি ধরা বা গুলি করে মারা পরিযায়ী পাখিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। দুই চার যুগ আগের চেয়ে এখন অতিথি পাখির আগমন যে অনেক কম তা খোলা চোখেও অনুভব করা যায়। দেশের জীববৈচিত্র্যতাকে টিকিয়ে রাখতে হলে অতিথি পাখি শিকারের সর্বনাশা অভ্যাসের ইতি ঘটাতে হবে।

সর্বশেষ খবর