বুধবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

সার্ক শীর্ষ সম্মেলন

হিমালয় কন্যা নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে আজ থেকে শুরু হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) ১৮তম শীর্ষ সম্মেলন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ইতিমধ্যে কাঠমান্ডুতে পৌঁছেছেন। সার্কভুক্ত আট দেশের সরকার প্রধানের শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে নতুন সাজে সেজেছে নেপালের রাজধানী। নেপালে অনুষ্ঠিতব্য শীর্ষ সম্মেলন সার্কের ইতিহাসে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা বলে বিবেচিত হবে এমনটিই আশা করা হচ্ছিল গত কয়েক দিন ধরে। এ সম্মেলনে সার্ক দেশগুলোর মধ্যে মোটরযান ও রেল যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা এবং বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা সম্পর্কিত তিনটি চুক্তি সম্পাদনের জন্য প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু পাকিস্তানের অনমনীয় মনোভাবের কারণে মোটরযান ও রেলযোগাযোগ সম্পর্কিত দুটি চুক্তির ভবিষ্যৎ এ মুহূর্তে গভীর অন্ধকারে। বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের সহযোগিতা বিষয়ক চুক্তির ব্যাপারে ক্ষীণ আশার আলো জ্বললেও তা দুপ করে নিভে যাবে, না আলোর দ্যুতি ছড়াবে তা জানার জন্য সম্মেলনের দিকে নজর রাখতে হবে। রবিবার পররাষ্ট্র সচিবদের প্রথম দিনের বৈঠকে সার্ক দেশগুলোর মধ্যে মোটরযান ও রেল যোগাযোগের ব্যাপারে চুক্তি সম্পাদনের আশা নিষ্প্রভ হয়ে পড়ে। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়, মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে আলোচনা ছাড়াই এ ধরনের চুক্তি সম্পাদনের সুযোগ নেই। বিদ্যুৎ চুক্তির খসড়া নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয় একই দেশের পক্ষ থেকে। সার্ককে যখন অর্থনৈতিক ইউনিয়ন হিসেবে প্রতিষ্ঠার চিন্তাভাবনা চলছে তখন পাকিস্তানের বাগড়া সে সম্ভাবনাকে অনেকখানিই ম্রিয়মাণ করে তুলবে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সম্পর্ক ঘনিষ্ঠকরণ এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রস্তাবিত তিনটি চুক্তির গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। সেগুলোর সম্ভাবনা নিষ্প্রভ হয়ে ওঠায় শীর্ষ সম্মেলন শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ এশিয়ার সরকার প্রধানদের বৈঠকটি গুরুত্ব হারাতে পারে এ অঞ্চলের প্রায় পৌনে দুই শত কোটি মানুষের কাছে। সার্কের চূড়ান্ত ঘোষণায় জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দেওয়া প্রস্তাব গৃহীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সার্কের কাঠমান্ডু সম্মেলনের প্রস্তুতি লগ্নে বহুপাক্ষিক সহযোগিতার যে সম্ভাবনা জেগে উঠেছিল তা নিষ্প্রভ হয়ে গেছে দেশ বিশেষের সংকীর্ণ মনোভাবের কারণে। তারপরও আমরা কাঠমান্ডু শীর্ষ সম্মেলনকে এই অঞ্চলের শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে মাইলস্টোন হিসেবে দেখতে চাই। সার্ক প্রতিষ্ঠার পর এর অর্জন দৃশ্যত খুবই সীমিত হলেও এ অঞ্চলের দেশগুলোতে যুদ্ধ এড়ানোর ক্ষেত্রে এ জোটের অবদান কম নয়।

 

 

 

সর্বশেষ খবর